সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: শিক্ষক সংগঠনের মিছিল নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ (Calcutta High Court Rebukes Teachers Agitation)। 'কাজ করতে হবে না, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ করে যান', মিছিল নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি (Calcutta High Court)। সঙ্গে সংযোজন,  রোজ ১৫টা করে মিছিল, স্কুলের বাচ্চারা হয়রানির শিকার হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স আটকে যাচ্ছে, রাস্তায় পড়ে থেকে মানুষ মারা যাচ্ছেন। বেঞ্চের বক্তব্য, পুলিশ লাঠিচার্জ করুক, কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করুক। এদের জন্য আমার কোনও সহমর্মিতা নেই। প্রধান বিচারপতির কথায়, 'নিজেদের কায়েমি স্বার্থ ছাড়া সকলকে অবহেলা করছে। মানুষের কথা কেউ ভাবেন না। অফিস যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।' বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের মিছিল সংক্রান্ত মামলায় মন্তব্য এদিন এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। 


প্রেক্ষাপট...
গত সপ্তাহেই মিছিলের অনুমতি চেয়ে আদালতর দ্বারস্থ হয়েছিল গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিষয়টি নিয়ে সেদিন বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি। শিক্ষকরা ক্লাস না করিয়ে মিছিলে অংশ নেবেন, এমনই মন্তব্য ছিল তাঁর। রাজ্য সরকারের যুক্তি, পুজোর আগে সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে এই মিছিলের অনুমতি দিতে রাজি হয়নি তারা। একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে আগামী ১৩ অক্টোবর মিছিল করতে চায় গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। আচার্য সদন থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি চায় তারা। কিন্তু এই রুটে তাঁদের মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তার পরই হাইকোর্টে গিয়েছিল শিক্ষকদের সংগঠনটি।


রাজ্য সরকারের 'এই যুক্তির' সঙ্গে একমত হননি বিচারপতি
সেদিনইৃ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলে দিয়েছিলেন, '৩ হাজার শিক্ষক দিনের ব্যস্ত সময়ে শহরে মিছিল করলে তার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্য এবং অ্যাসোসিয়েশন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিকল্প রুটের সন্ধান দিলে  বিবেচনা করে দেখতে পারে আদালত।' কিন্তু, রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে দাবি করা হয়, পুজোর আগে মিছিল করলে সাধারণ মানুষকে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে। যদিও রাজ্য সরকারের এই যুক্তির সঙ্গে একমত হননি বিচারপতি। মহালয়ার আগে মিছিল হতেই পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তার পর, এদিন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এদিন কার্যত ভর্ৎসনা করে।


আগেও জলঘোলা...
সম্প্রতি গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলের ইস্যুতেও জলঘোলা হয়েছিল। থিয়েটার রোড এবং ক্যামাক স্ট্রিটের সংযোগস্থল থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেই মতোই মিছিল হয়েছিল। কিন্তু মিছিলের রুট নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য। এর পরে আদালত প্রশ্ন তোলে,  রাজ্য সরকার যে স্কুলগুলি কথা উল্লেখ করেছে সেগুলি কোনওটিই ক্যামাক স্ট্রিটের ওপরে নয়।  কোনও বিক্ষোভ সমাবেশ নয়, মিছিল করে চলে যাবে। তাতে আপত্তি কোথায়? রাজ্য সওয়াল করে, ট্রাফিক জ্যাম হবে। শেষ অবধি কোনও যুক্তিই ধোপে টেকেনি। হাইকোর্টে রাজ্যের আবেদন খারিজের পর শেষ অবধি গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল সংগঠিত হয়।


আরও পড়ুন:পঞ্চায়েত ভোটে হেরে যাওয়ার পর, বিজেপি প্রার্থীর বাড়ির নিকাশি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ