রাজা চট্টোপাধ্যায়, মালবাজার: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বালিপাচার রুখতে জোরদার অভিযানে নামল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। গতকাল এসডিপিও-র নেতৃত্বে মালবাজারে চেল, ঘিস, লিস নদীতে চলে অভিযান। ছিলেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা। আটক করা হয় বেশ কয়েকটি বালি-পাথর বোঝাই ডাম্পার ও ট্র্যাক্টর। মালবাজারের মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, এ ধরনের অভিযান লাগাতার চলবে।


বিভিন্ন নদীতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বালি পাথর বোঝাই ডাম্পার এবং ট্রাক্টর আটকের পাশাপাশি মিনি ক্যাসারের চালনি বাজেয়াপ্ত করা হয়। মালবাজারের মহকুমাশাসক পিয়ুস ভগনরাও শালুঙ্কে বলেন, “জেলা প্রশাসনের নির্দেশেই অভিযান চলছে।’’ মালবাজারের ভুমি ও ভুমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিক জিতি লামা বলেন, “আমাদের কাছে খবর ছিল বেশ কিছু নদীতে অবৈধ কারবার চলছে, তাই আমাদের এই অভিযান। কিছু গাড়িও ধরা পড়েছে। তাছাড়া নদীর বুকে যেসব চালনি বসে ছিল, সব খুলে নেওয়া হয়েছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’


আরও পড়ুন: বানারহাটে ভ্যাকসিনের লাইনে পদপিষ্ট ১৯, বিডিও ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে শোকজ জেলাশাসকের


বেআইনি ঘাট থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে বালি, পাথর। কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না বলে, আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বালি খাদান নিয়ে নতুন স্কিম। স্থানীয় মাফিয়াদের জন্য করতে পারছি না, বালি, কয়লা, পাথর। যতটা তোলার তার চার ডবল নিয়ে পালিয়ে যায়। স্যান্ড মাইনিং পলিসি। মিনারেল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের কাছে দেওয়া হচ্ছে।’’ অবৈধ বালি খাদান রুখতে এবং  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গতকালই জেলা প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। নবান্ন সূত্রে খবর, ওভারলোডিং বন্ধ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব আরটিওকে।


মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো খননের নজরদারির দায়িত্ব, জেলাশাসকদের হাত থেকে বর্তেছে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের কাছে। নবান্নে সূত্রে খবর, নজরদারি বাড়ানোর পর, দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলার পাশাপাশি, ডুয়ার্সের একাধিক এলাকা থেকে বালি চুরির অভিযোগ এসেছে। অবিলম্বে সেইসমস্ত অবৈধ বালি খাদান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। অবৈধ কারবারিদের সনাক্ত করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন: ছ'মাস ধরে বন্ধ পানীয় জল, ফাঁকা কলসি-বালতি নিয়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের