গ্রেফতার বাগদার 'রঞ্জন' ( Bagda Ranjan )। গ্রেফতার করল সিবিআই ( CBI ) । নিজাম প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার বাগদার 'রঞ্জন'। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ( Recruitment Scam ) গ্রেফতার বাগদার 'রঞ্জন' ওরফে চন্দন মণ্ডল তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা, জিজ্ঞাসাবাদের পর জানাল সিবিআই ( CBI )। শুক্রবার তাঁকে আদালতে পেশও করা হয়। এর আগে তাঁকে ২১ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সিবিআই-এর দাবি, তাঁর সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগ ছিল। তাঁর ব্যাঙ্ক-আকাউন্ট খতিয়ে দেখে এই সন্দেহ তৈরি হয়। টাকার বিনিময়ে অনেক যুবককে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। চন্দন মণ্ডলের মামা ভাগিনা গ্রামের অনেক বাসিন্দা এই অভিযোগ আনেন। তিনি লক্ষ-লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি দিতেন বলে অভিযোগ। তাঁর বাড়িতে চাকরি পাওয়ার জন্য লাইন লেগে যেত। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ চাকরি পেয়েওছিলেন বলে অভিযোগ। আবার অনেককে চাকরি পাননি।  

প্রথমবার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের নাম সামনে আনেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক এবং প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস। তিনি দাবি করেন, এই বাগদার রঞ্জন বস্তা বস্তা টাকা নিতেন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ও সেই টাকা পাচার  হয়ে যেত কলকাতায়।  প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর নাম ঘুরতে থাকে রাজ্যবাসীর মুখে মুখে!কিন্তু, সর্বসমক্ষে তাঁর দেখা মেলেনি। যে দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার হয়, সেদিনই, কলকাতা হাইকোর্টে নাটকীয়ভাবে দেখা মেলে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ‘বাগদার রঞ্জন’ অর্থাৎ চন্দন মণ্ডলের!


বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে, কলকাতা হাইকোর্টে হাজির হন তিনি। ওই দিন অভিযুক্ত চন্দন মণ্ডলকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'আপনার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আপনি জানেন? ' উত্তরে চন্দন বলেন, ' না । আমি জানি উপেন বাবু ভিডিও ভাইরাল করেছেন। ' এরপর বিচারপতি বলেন, 'আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনি টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন।' উত্তরে চন্দন মণ্ডল দাবি করেন, 'না। আমি টাকা নিইনি। আর চাকরিও দিইনি।'


এবিপি আনন্দর 'যুক্তি-তক্কো' অনুষ্ঠানেও, এই রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের কথা বলেছিলেন উপেন বিশ্বাস।  রঞ্জন-রহস্য ভেদ করতে CBI’কে দায়িত্ব দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের বিরুদ্ধে, প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা করে তদন্ত করছে CBI। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, ৮ জুন FIR দায়ের করে, রঞ্জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন। সেই মতো, গতবছরের ৯ জুন, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের বিরুদ্ধে এফআইআর ( FIR ) দায়ের করে সিবিআই। এরপর তাঁকে বহুবার দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। 


স্কুলের নিয়োগে পাহাড়-প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পরই, বাগদার সৎ রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের নাম সামনে  আসে। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে চাকরি দেওয়ার, বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস। এরপর বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের তালিকায় খোঁজ মেলে সেই রঞ্জনের ছাত্র থেকে প্রতিবেশীর! হাইকোর্টে জমা দেওয়া এসএসসির বেআইনি নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁদের। 


গোয়েন্দা সূত্রে দাবি,  রঞ্জনের দেওয়া তথ্যে মিডলম্য়ান প্রদীপ এবং প্রসন্নর নাম উঠে এসেছে। এছাড়া বেআইনিভাবে নিয়োগপত্র পাওয়া ৩৫০ জন গ্রুপ সি প্রার্থীও এই দুজনের নাম করেছেন। এর আগেও এবিপি আনন্দর ক্য়ামেরাতেও প্রসন্নকে চেনার কথা স্বীকার করেছিলেন রঞ্জন।