প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) হাতে আগেই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। শিক্ষক নিয়োগ দু্র্নীতি কাণ্ডে (SSC Scam) এ বার সক্রিয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও (CBI)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) হেফাজতে নিতে চায় তারা। সেই মর্মে পিটিশন দায়ের করল আদালতে। আগামী কাল অর্থাৎ শুক্রবার সেই আবেদনের শুনানি রয়েছে। তার জন্য আদালতে পেশ করা হবে পার্থকেও। 


হেফাজতে নিয়ে পার্থকে জেরা করতে চায় সিবিআই-ও


আলিপুর জাজ আদালতে এই পিটিশন দায়ের করেছে সিবিআই। তারা জানিয়েছে, তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত একাধিক বার পার্থর সংযোগ উঠে এসেছে। দুর্নীতি কাণ্ডে তিনিও সমান ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে বার বার উঠে এসেছে। তাই পার্থকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। 


বুধবার আলিপুর জাজ কোর্টে, সিবিআই-এর স্পেশ্যাল কোর্টে ওই পিটিশনটির শুনানি রয়েছে। তার জন্য প্রেসিডেন্সি জেল থেকে আলিপুর জাজ কোর্টে পেশ করা হবে পার্থকে। তাঁকে সামনে রেখেই শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে। 


স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও গ্রেফতার হয়েছেন। ইডি-র দাবি, অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার কোটি কোটি টাকা, সম্পত্তি আসলে পার্থরই। পার্থ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন গোড়া থেকেই। 


১৪ দিনের ইডি হেফাজত শেষে এর আগে বুধবার ভার্চুয়াল শুনানি ছিল পার্থ এবং অর্পিতার। সেখানে কেঁদে ফেলেন দু’জনেই। তিনি কিছু বলতে চান কি না, জানতে চান বিচারক। তাতেই কেঁদে ফেলেন পার্থ। বলেন, "আমি জনসেবক। ৩০ ঘণ্টা আমার বাড়িতে ছিল ইডি। কিছু পায়নি। ১০০ কোটি টাকার কথা বলছেন ওঁরা। আমার বাড়িতে এসে দেখুন। দেখুন আমার বিধানসভা কেন্দ্রে এসে।"


আরও পড়ুন: Coal Scam: কয়লা পাচারকাণ্ডে এবার জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে তলব সিআইডি-র, শুক্রবার হাজিরার নির্দেশ


নিজের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন অর্পিতাও। তিনি বলেন, "৩০ ঘণ্টা ইডি-র আধিকারিকরা বাড়িতে ছিলেন। আমি নিজেও জানি না, কোথা থেকে, কীভাবে, টাকা উদ্ধার হয়েছে। ইডি যখন যায়, ৮ ঘণ্টা বেডরুমে ছিলাম। বেরোইনি। আমার কোনও আইডিয়া ছিল না। ৪ ঘণ্টা বাথরুমে ছিলাম। তারপর বেডরুমে চলে আসি, কিছুই জানি না। কোথা থেকে টাকা পেল।"


তবে ইডি আদালতে জানায়, নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে এবং টাকার অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করছে তারা। তারা জানিয়েছে, অর্পিতার দুই অ্যাকাউন্টের প্রথমটিতে ৩.১০ কোটি টাকা খেপে খেপে জমা পড়েছে ২০১৭ সালের জুন থেকে ২০২২-এর জুলাই পর্যন্ত। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ২.২২ কোটি টাকা জমা পড়েছে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে অর্পিতার অ্যাকাউন্টে।


১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুমান ইডি-র


ইডি আরও জানিয়েছে, গত ১৪ দিনে আরও যে দু'টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, এর মধ্যে রাসবিহারী কানেক্টরে ৪ কোটি টাকার বাড়ির হদিশ মিলেছে। যামিনী রায় রোডে ৫ কোটি টাকার আরও একটি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছে ইডি। ব্যবসার জন্য বাড়ি বলা হলেও, সেখানে ব্যবসার কিছুই হত না, কোর্টে দাবি ইডি-র।