বিটন চক্রবর্তী, নন্দীগ্রাম: ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) মামলায় নন্দীগ্রামে তৃণমূল (Trinamool) নেতা আবু তাহের-সহ ৩ জনের বাড়িতে সিবিআই (CBI) হানা। সকালেই তৃণমূল পরিচালিত নন্দীগ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহেরের বাড়ির চারপাশ ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতা শেখ খুশনবি ও তৃণমূল কর্মী শেখ আমানুল্লার বাড়িতেও এদিন তল্লাশি চালায় সিবিআই। 


ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তদন্ত সিবিআইয়ের: রাজ্যের দুই প্রান্তে সক্রিয় দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বুধবার রাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ২৮ কোটি নগদ ও বিপুল সোনা উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় আবু তাহের-সহ তিন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বাড়িতে হানা দিল CBI। ২০২১-এ বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরের দিনই, ৩ মে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির ওপর তৃণমূল হামলা করে বলে অভিযোগ। ১০ দিন পর, ১৩ মে  কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।


সিবিআই সূত্রে দাবি, সেই মামলায় তৃণমূল নেতা ও নন্দীগ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের, বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ শেখ খুশনবি, এবং তৃণমূল কর্মী শেখ আমানুল্লাকে একাধিকবার তলব করা হলেও, হাজিরা দেননি তাঁরা। CBI-এর আর্জির ভিত্তিতে গত সোমবার হলদিয়া মহকুমা আদালত আবু তাহের-সহ ৩ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এরপরই এদিন সকাল সাতটায় তিনটি দলে ভাগ হয়ে, তিন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বাড়িতে হানা দেয় CBI। যদিও তিন নেতার কেউই সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। কেন্দামারির গোপীমোহনপুরে আবু তাহেরের বাড়িতে যায় তদন্তকারীদের একটি দল। বাড়ির চারপাশ ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারপর বাড়ির ভিতরেও চলে তল্লাশি। আবু তাহেরের বাড়ি থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে, সামসাবাদে একইভাবে শেখ খুশনবি এবং শেখ আমানুল্লার বাড়িতেও হানা দেয় CBI।


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের গুরুতর অভিযোগগুলির তদন্ত করছে CBI। তবে নন্দীগ্রামে একসঙ্গে দলের তিন নেতা-কর্মীর বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দেওয়ায়, নাম না করে বিজেপিকে নিশানা করেছে তৃণমূল। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, “সিবিআই তাদের কাজ করবে, আদালতের নির্দেশে করছে, কিন্তু চাইব যাতে নিরপেক্ষ কাজ করে। বোঝাই যাচ্ছে একটি দলের হয়ে কাজ করছে, মির্জাফরের হয়ে কাজ করছে।’’ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেবব্রত মাইতিকে চক্রান্ত করে মেরে ফেলেছে, সিবিআই-এর উপর আস্থা আছে। আইন আইনের মতো চলছে। এতে আমাদের দলের যোগ নেই।’’ গত বছর অক্টোবরে, বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতিকে খুনের অভিযোগে, শেখ সুফিয়ানের জামাই-সহ ১১জন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে CBI। সেই মামলাতেই আরও তিন তৃণমূল নেতা-কর্মীর খোঁজে বাড়িতে হানা দিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: তৃণমূল ভবনে আজ দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক ডাকলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়