সন্দীপ সরকার, আবির দত্ত ও আবির ইসলাম,বোলপুর: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ালেও, গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের পাশেই রয়েছে তৃণমূল। ইচ্ছা কের তাঁকে গ্রেফতার করে পুরে রাখা হয়েছে বলে রবিবারই মন্তব্য করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীরা যদিও অনুব্রতর কোটি কোটি টাকা বলে দাবি করছেন। সেই আবহে এ বার অনুব্রতর একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে সিবিআই-এর একটি সূত্র দাবি করছে। সিবিআই-এর ওই সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত নামে-বেনামে অনুব্রতর ৪৫টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। তার হদিশ পেতেই এই মুহূর্তে তৎপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
নামে-বেনামে সম্পত্তি অনুব্রতর!
এর আগে, গতকালই বোলপুর থেকে কিছুটা দূরে সিয়ানে ৫০ বিঘা জমির উপর অনুব্রতর খামারবাড়ি রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন স্থানীয়রা। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতর সেখানে যাতায়াত রয়েছে, খামারবাড়িতে ধান, সবজি, জলাশয়ে মাছ চাষের পাশাপাশি, তার মধ্যে অবস্থিত শিবমন্দিরের প্রতিবছর শিবরাত্রির পুজোয় উপস্থিত থাকার খবর সামনে আসে। এই মুহূর্তে ওই খামারবাড়িতে এক কেয়ারটেকার রয়েছেন বলেও জানা যায়। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘এই খামারবাড়ি কেষ্টজেঠুর। মাঝে মাঝে আসেন। শিবরাত্রির দিন পুজো হয়। নিয়ম করে আসেন। এবারও এসেছিলেন কেষ্ট জেঠু।’’
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আমি বোকা লোক, আর তুমি হবে ভাল, বিএসএফ কার হাতে’! গরুপাচার নিয়ে মমতার নিশানায় শাহ
সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই এ বার সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, একাধিক রাইসমিল রয়েছে অনুব্রতর। বোলপুরে তাঁর বাড়ির কাছেই ভোলে ব্যোম নামের রাইস মিলটি তাঁর। ওই রাইসমিলের মালিক অনুব্রতই, এমনটা দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগেই ওই রাইসমিলের মালিকানা অনুব্রতর হাতে ওঠে। তবে এই মুহূর্তে তার ফটকে তালা ঝুলছে। তাঁর ফাঁক দিয়ে ভিতরে একাধিক মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়। এমনকি ভিতরে মানুষকে ঘোরাফেরাও করতে দেখা যায়।
দলনেত্রীর স্নেহধন্য অনুব্রত রাজনীতিতে আসার আগে মুদির দোকানে কাজ করতেন বলে শোনা যায়। এমনকি মাছের ব্যবসা, গ্রিলের কারখানাও ছিল বলে শোনা যায়। কিন্তু বিগত ১৮ বছর ধরে বীরভূমে তৃণমূলের চোখ-কান-মাথা হিসেবেই তিনি পরিচিত। কোনও দিন বিধায়ক বা সাংসদ হননি অনুব্রত। দলের অন্দরে গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন না তিনি। তার পরেও তাঁর বিপুল সম্পত্তি এল কোথা থেকে,তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ অনুব্রতর বিরুদ্ধে
তবে সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্পত্তির আয়ের উত্স নিয়ে বারবার প্রশ্ন করা হলেও, বেশিরভাগ সময়ই অনুব্রত চুপ থাকছেন। না হলে, প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন। আর যে প্রশ্নগুলির উত্তর দিচ্ছেন, তা সন্তুষ্টিজনক নয়। ফলে অনুব্রতকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করে চলেছেন গোয়েন্দারা।