কলকাতা: বিভিন্ন সময় শাসকের রোষে পড়েছে সিনেমা। মোদি সরকার নিষিদ্ধ করেছে BBC-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোয়েশ্চেন'। গুজরাতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল পরজানিয়া এবং ফিরাক-এর মতো ছবি। রাজ্যেও এরকম নানা উদাহরণ রয়েছে।
শাসকের 'রোষে' সিনেমা: সিনেমা নিষিদ্ধে আড়াআড়ি ভাগ রাজনীতি। যখন হিন্দি ছবি 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তখন, বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যে দেখা যাচ্ছে অন্য ছবি। আর, এনিয়েই সেলুলয়েডের টানাপোড়েন চলে বাস্তবের মাটিতে।'দ্য কেরালা স্টোরি'কে আগেই করমুক্ত ঘোষণা করেছিল বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকার। এবার আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য, উত্তরপ্রদেশেও এই ছবিকে করমুক্ত ঘোষণা করা হল। নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এর আগেও, একাধিকবার শাসকের রোষে পড়েছে সিনেমা। সাম্প্রতিককালে BBC-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোয়েশ্চেন' তোলপাড় ফেলে দেয়।কিন্তু ভারতে তা সম্প্রচার করতে দেয়নি মোদি সরকার।মনে করা হয়, ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাতের মুখ্য়মন্ত্রী তখন আমদাবাদ-সহ গুজরাতের বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষয়ী হিংসার প্রসঙ্গ থাকায়, এই তথ্য়চিত্র নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগে গুজরাতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল পরজানিয়া এবং ফিরাক-এর মতো ছবি। গুজরাতে মুক্তি পায়নি আমির খান ও কাজল অভিনীত ফনা। শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্যেও এই উদাহরণ রয়েছে।বাম আমলে ২০০৬-এ নন্দনে সুমন মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘হারবার্ট’-এর প্রদর্শনের অনুমতি নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল৷১৯৫৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল মৃণাল সেনের ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’। মুক্তির প্রায় দু’বছর পর কিছু আমলার পরামর্শে ছবিটি নিষিদ্ধ হয়, চিন-ভারত যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে৷ দু’বছর পর সুচেতা কৃপালিনীর সক্রিয়তায় তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ছবিটি দেখেন৷ তাঁর নির্দেশে ছবিটিকে মুক্ত করা হয়৷ সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কাঙাল মালসাট’ ছবিটি নিয়েও বিতর্ক দানা বাঁধে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ এবং বিভিন্ন সরকারি কমিটি নিয়ে কিছু দৃশ্য নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। এর আগে দু’হাজার একেও একইভাবে চলচ্চিত্রের ওপর নেমে এসেছিল শাসকের খাড়া৷ সেবার আলেকজান্ডার সকুরভের ছবি টরাসের প্রদর্শনে আপত্তি জানিয়েছিলেন বিমান বসু৷ লেনিনকে হেয় করা হচ্ছে অভিযোগে কলকাতা চলচ্চিত্র উত্সবে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল একটি সংগঠন৷ নিট ফল ছবিটি তুলে নেওয়া হয়েছিল৷ 1975 সালে জরুরি অবস্থার সময় কিসসা কুর্সি কা ছবির মুক্তিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। বলা হয় এর নেপথ্য়ে ছিলেন সঞ্জয় গাঁধী। সেই ছবি কোনওদিন মুক্তির মুখ দেখেনি। জরুরি অবস্থার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল গুজলাজ পরিচালিত সুচিত্রা সেন ও সঞ্জীব কুমার অভিনীত বিখ্য়াত ছবি আঁধি।জনতা সরকার ক্ষমতায় আসার পর আঁধি মুক্তি পায় এবং সুপারহিট হয়।
আরও পড়ুন: Walking Fact: পার্ক না কি ট্রেডমিল? দৌড়নোর লাভ কোথায় বেশি? কোনটা বাছবেন?