অরিত্রিক ভট্টাচার্য, শিবাশিস মৌলিক ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস ঘিরে তুলকালাম মহাজাতি সদনে। কৌস্তভ বাগচিকে (Koustav Bagchi)  ঘিরে ধস্তাধস্তি-বচসা। আর সেই ঝামেলার জন্য সরাসরি তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি। পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। 


সোমবার কংগ্রেস (Congress) সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তৃতার সময় হঠাৎই কৌস্তভ বাগচীর নামে স্লোগান দিতে দিতে অডিটোরিয়ামে ঢোকে বেশ কয়েকজন ছাত্র পরিষদের সদস্য়। তখনকার মতো কংগ্রেস নেতৃত্ব বিষয়টা থামিয়ে দেয়। কিন্তু এর রেশ চলে আসে অডিটোরিয়ামের বাইরে।  অভিযোগ, বাইরে কৌস্তভ বাগচীর অনুগামীদের মারধর করে, কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদের কিছু কর্মী সমর্থক। মহাজাতি সদনে ছাত্র পরিষদের অনুষ্ঠানে গোলমালের জেরে শুধুমাত্র তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন না কৌস্তভ বাগচি, নিজের দলের একাংশকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। 


কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'আমার যারা দলের ছেলেরা ছিল, তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। আমি বলছি এটা কার স্বার্থে? আমি দলের মধ্য়ে দাঁড়িয়ে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছি বলে?আজকে তৃণমূলের দালাল কংগ্রেসের মধ্য়ে কিছু থেকে, দলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। দলের মধ্য়ে, যারা তৃণমূল কংগ্রেসের চামচা তারা আজ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।' তাঁর আরও অভিযোগ,' খুব পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর একটা আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল। সেটা না পেরে, আমার ছেলেদের ওপর হাত তোলা হচ্ছে। আমি বিচার চাইব দলের নেতৃত্বর কাছে।'


কৌস্তভ বাগচীর ক্ষোভ প্রকাশের মধ্য়েই, অডিটোরিয়াম থেকে বেরিয়ে আসে একদল কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদ নেতা। ক্য়ামেরার সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় কৌস্তভকে। প্রথমে ধাক্কা, ধস্তাধস্তি, এরপর কৌস্তভকে লক্ষ্য় করে উড়ে আসে কটূক্তি। একজনকে কংগ্রেস নেতার দিকে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যেতেও দেখা যায়। এক ছাত্র পরিষদ নেতাকে বলতে শোনা যায়, 'অধীরদার বিরুদ্ধে কথা বলবি না।' পাল্টা কৌস্তভ বাগচি বলেন,'অধীরদার বিরুদ্ধে কথা বলেছি?' তখন ছাত্র পরিষদ নেতা বলেন, 'সিনিয়রদের গ্রাহ্য় করবি না?' তারপর ডামাডোলের মধ্যে কৌস্তভ বাগচীকে বলতে শোনা যায়,'আশ্চর্য এ জিনিস চলতে পারে? গায়ে হাত তুলে দেবে?' শুরু হয় স্লোগান-পাল্টা স্লোগান।


যদিও এই ঝামেলা মানতে চাননি ছাত্র পরিষদ নেতা সৌমেন পাল। তাঁর দাবি, 'ছাত্র রাজনীতিতে অল্পআধটু কিছু হয়। সেটা বড় ইস্যু না। বাড়িতে কয়েকটা থালা থাকলে আওয়াজ হবে। সিনিয়রদের কোনও গন্ডগোল না। বাচ্চাদের হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।' এই ঝামেলা নিয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও (Adhir Chowdhury)। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতে, 'এটা আবেগের অনুষ্ঠান। একটু ঝামেলা হয়। প্রতিবারই থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবারও তাই হয়েছে।'


তৃণমূলের কটাক্ষ:
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'নেড়া মাথায় নিজের বাড়িরই বেল পড়েছে। আবার বলছে তৃণমূল মেরেছে। তৃণমূল তো ত্রিসীমানায় নেই। কংগ্রেস ওকে পছন্দ করে না। ওর মাথার চুল নেই। কী বিচার চায় ও।'


এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কানহাইয়া কুমার। তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্য অবশ্য ছিল বিজেপিই।


আরও পড়ুন: ক্ষুদ্র শিল্পে ১০ লক্ষ চাকরি! নিয়োগ নিয়ে বড় আশ্বাস মমতার