আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা:  নির্বাচনের পর থেকেই লাগাতার সংঘাতের আবহ দেখা দিয়েছে। কখনও সরাসরি, কখনও নাম না করে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ চলেছে। তার মধ্যেই বারবার বিজেপি নেতাদের মুখে উঠে এসেছে ডিসেম্বর ডেডলাইন। তার আগে নভেম্বরে বিধানসভায় সৌজন্যের ছবি দেখা গেল। আজ বিধানসভায় প্রথমার্ধের অধিবেশন শেষ হওয়ার পরে বিধানসভায় তাঁর ঘরে যান মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল, অশোক লাহিড়ি, মনোজ টিগ্গা ৪ জনকে ডেকে পাঠান। মিনিট সাতেক তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ছিলেন। মিটিংয়ের পরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ'  


এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, 'রাজ্যপাল শপথ নিলেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। বিরোধী দলনেতাও গেলেন না। শিল্প সম্মেলনে কেন আসেন না আপনারা?' পাশাপাশি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সবাইকে আমন্ত্রণ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আপনাদের আজ আমন্ত্রণ করলাম। বিরোধী দলের সবাই আসুন।' এদিন বিকেলে প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী স্মারক ভবন বিধানসভার উদ্বোধন ছিল। সেখানে বিরোধী দলনেতা-সহ বিরোধীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কেউ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।


শুভেন্দুর সমালোচনা:
এদিন বিধানসভায় একাধিক ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'অফ দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, অনেক সময় অব দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক সভায় বিরোধীরা ডাক পান না। তাঁদের বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। সেখানে শুধু শাসকদলের বিধায়কদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়।' 


মমতার পাল্টা:
এই বিষয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যাকে ভাইয়ের মতো স্নেহ করতাম, তিনি বললেন, অব দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টির গভর্মেন্ট হয়ে গেছে। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার কী দিয়ে চলছে? বাই দ্য এজেন্সি, অব দ্য এজেন্সি ফর দ্য এজেন্সি? আমাদের সরকার চলে মানুষের হয়ে মানুষের জন্য।' তিনি আরও বলেন, অনেকসময়েই বিরোধীদের প্রশাসনিক বৈঠকে ডাকা হয়, কিন্তু তারা আসেন না।'


এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আপনি একসময় কংগ্রেসে, তারপর তৃণমূলে ছিলেন। অখিল গিরি দলের জন্মের সময় ছিলেন। আপনার বাবা সিনিয়র নেতা, তাঁকে সম্মান করি।' সম্প্রতি রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অখিল গিরির একটি মন্তব্যে দেশজুড়ে শোরগোল হয়েছে। যা নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি। শুভেন্দুর নেতৃত্বে অখিল গিরিকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর দাবি নিয়ে মিছিলও হয়েছে। অখিল গিরির ওই মন্তব্য গিয়ে পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে মুখ খোলেন। অখিল গিরির হয়ে নিজে ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী।


সম্প্রতি তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল। তার মধ্যেই বিধানসভায় দেখা গেল এমন ছবি।

আরও পড়ুন: সংঘাতের আবহেই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে শুভেন্দু অধিকারী, কেন?