রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: লেখাপড়ার নামে এ কোন ধরনের শাসন? জলপাইগুড়ির (jalpaiguri) ঘটনায় প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পড়া না পারায় গৃহশিক্ষিকার (private tutor) বিরুদ্ধে সাড়ে ৪ বছরের শিশুকে (kid) লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরের (assault) অভিযোগ উঠেছে সেখানে। মারের চোটে পা (leg) ভেঙেছে (broken) খুদের। শাসনের নামে কেন এমন নিষ্ঠুরতা, প্রশ্ন পরিবারের।


কী ঘটেছিল?
প্রহৃত শিশুর মা জানাচ্ছেন, আগেও লেখাপড়া না করার জন্য তাকে মারধর করতেন ওই গৃহশিক্ষিকা। কিন্তু অতীতে এতটা মারাত্মক পর্যায়ে তা যায়নি। শিক্ষিকার কাছে মার খেয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে এসে খুদে মাকে বলে, 'দিদিমণি আমাকে পায়ে মেরেছে। আমি পা তুলতে পারছি না।' ধরা পড়ে, পা ভেঙেছে তার। শিশুর পরিবারের দাবি, ওই গৃহশিক্ষিকা অতীতে প্রায়ই পড়া না পারা, মিথ্যা কথা বলার মতো অভিযোগ করতেন খুদের বিরুদ্ধে। কিন্তু পরিস্থিতি যে এতটা চরম হয়ে যাবে, সেটা কেউই আঁচ করতে পারেননি। আপাতত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে পলাতক গৃহশিক্ষিকা। পায়ে প্লাস্টার করে বসে রয়েছে শিশুটি। যন্ত্রণায় মাঝেমধ্যে কঁকিয়ে উঠছে।


নতুন নয়...
শিক্ষকের হাতে খুদে পড়ুয়াদের মার খেয়ে জখম বা অসুস্থ হওয়ার অভিযোগ নতুন নয় এ রাজ্যে। প্রায় প্রত্যেক বছরই কিছু না কিছু ঘটনা শোনা যায়। তবে বছরপাঁচেক আগেকার একটি ঘটনা মেরুদণ্ড দিয়ে হিমস্রোত বইয়ে দিয়েছিল অভিভাবকদের। সেবার অভিযোগ ওঠে, ক্লাসে দুষ্টুমি করায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছেন শিক্ষক। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার নিন্দা করেন প্রধান শিক্ষকও। জখম ছাত্রের দাবি, টিফিনের সময় সে তার বন্ধুর সঙ্গে খুনসুটি করছিল। অভিযোগ, তা দেখে অভিযুক্ত শিক্ষক একটি ফাইবারের পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। সে বলে, সবাই কথা বলছিল। স্যর এসে মারতে থাকে। বলে টিসি দিয়ে দেব। ছাত্রের পরিবার শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তবে, ছোট্ট ছেলেটি বিষয়টি নিয়ে এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল যে সে আর স্কুলে যেতে চায়নি। ঘুমের মধ্য়েও আতঙ্ক তাড়া করছিল তাকে। কার্যত একই ঘটনার রেশ ধরা পড়েছে বার বার। কিন্তু প্রশ্নটা অন্যত্র। এভাবে মারধর করে কি লেখাপড়া বা শৃঙ্খলা শেখানো যায়? যদি না যায়, তা হলে কেন এই কৌশল নেন শিক্ষকদের কেউ কেউ?   

আরও পড়ুন:শ্বাসরোধ করে সন্তানকে 'খুনের' পর আত্মঘাতী বাবা, দেনার দায়েই কি চরম পথ?