হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া: বাবার (father) বিরুদ্ধে শিশুকন্যাকে (daughter) খুনের (murder) অভিযোগ, তোলপাড় পুরুলিয়ার (purulia) আদ্রায়। আত্মঘাতী (suicide) হয়েছেন ওই ব্যক্তিও। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি স্ত্রী (wife)। দেনায় (debt) জর্জরিত পরিবার। সেই কারণেই কি চরম পদক্ষেপ? তুঙ্গে জল্পনা।


কী ঘটেছে?
'আমাকেও মেরে ফেলতে পারত, তিন জনে তা হলে একসঙ্গেই শেষ হয়ে যেতে পারতাম', সন্তান ও স্বামীকে হারিয়ে বিলাপ করছেন অসুস্থ যুবতী। হুইলচেয়ারে বসেই সংবাদমাধ্যমকে বললেন, 'আমরা একসঙ্গেই খেয়েছিলাম। মেয়েটি টিভিতে কার্টুন দেখছিল। হয়তো কোনও এক ফাঁকে তরকারিতে বিষ মিশিয়ে দেয়। বুঝতে পারিনি। সেই তরকারিই খেয়েছিলাম।' পরে টের পান, সন্তান নিথর হয়ে পড়ে রয়েছে। স্বামীও নেই। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, সাড়ে ৫ বছরের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বাবা। তার পর আত্মঘাতী হন। মর্মান্তিক এই ঘটনার প্রাথমিক অনুসন্ধানে যা উঠে এসেছে তার সঙ্গে হালেরই একটি ঘটনার মিল পাচ্ছেন অনেকে। এ রাজ্যে নয়, ঘটনাটি ঘটেছিল কর্নাটকে। সন্তানকে খিদের জ্বালায় কষ্ট পেতে দেখে  তাকে 'খুন' করে দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে কর্মরত এক তথ্য়প্রযুক্তিবিদ, অভিযোগ ছিল এমনই।


একই ঘটনা কি আগেও?
নভেম্বরের একেবারে শেষ দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনায় নাম জড়ায় রাহুল পারমারের। আদতে তিনি গুজরাতের বাসিন্দা হলেও বছরদুয়েক আগে স্ত্রী ভাব্যাকে নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে এসেছিলেন। সেখানেই থাকতেন। পুলিশ জেনেছে, গত ৬ মাস ধরে রাহুলের কোনও রোজগার ছিল না। বিটকয়েনের ব্যবসায় ব্যাপক আর্থিক ধাক্কাও খেয়েছিলেন তিনি। গত ১৫ নভেম্বর হঠাৎ বেপাত্তা হয়ে যান রাহুল। একই দিন থেকে খোঁজ মিলছিল না ২ বছরের খুদেরও। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ জানান ভাব্য়া। এর পরই প্রকাশ্যে আসে সবটা। তবে কিছুটা অদ্ভূত ভাবে। কেনদাট্টি গ্রামের একটি বিশাল দীঘিতে এক শিশুর দেহ ভাসতে দেখেন গ্রামবাসীরা। দীঘির পাড়ে একটি নীল গাড়িও দাঁড়িয়ে ছিল বলে দাবি তাঁদের। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হওয়ায় স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে খবর দেন গ্রামবাসীরা। দুইয়ে দুইয়ে চার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্য়কর তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি, রাহুল স্বীকার করেছেন ওই গাড়িতেই মেয়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ খেলাধুলো করেন তিনি। আদর করেন তাকে। তার পর মেরে ফেলেন। টাকা ছিল না। তাই মেয়েকে খেতে দিতে পারছিলেন না। সেই 'অপারগতা' থেকেই খুন, বলে দাবি করেছেন রাহুল। সন্তানকে শেষ করার পর দীঘির জলে ডুবে আত্মঘাতী হওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পারেননি। 

আরও পড়ুন:সামাজিক বিপ্লবেই বেরোল সমাধান! নীতি পুলিশের অবলুপ্তি ইরানে, আর বাধ্যতামূলক নাও থাকতে পারে হিজাব