কলকাতা: চিনে (China) ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ। আগামী সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসে, পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের অনুমান, সংক্রমণের ঢেউ চূড়ায় পৌঁছলে চিনে প্রতিদিন মৃত্যু হতে পারে ৫ হাজার মানুষের। এই পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকদের একাংশের মত এই সংক্রমণের ভয়াবহতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। 


শুক্রবার এবিপি আনন্দের ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, "চিন বিপদে আছে, সেখানে কনফিউশন নেই। চিন প্রথমে ভেবেছিল বাক্সবন্দি করে হয়ত এই ভাইরাসকে আটকানো যাবে। এটা বিজ্ঞানের সঠিক পদক্ষেপ নয়। এই জীবাণু বার বার বোকা বানিয়েছে আমাদের। তবে চিন বিপদে আছে বলে আমরা ঢুবতে যাচ্ছি এটা হয়ত সঠিক নয়। আমাদের দেশের রাজনীতিকরাও গত তিন দিন ধরে যে শঙ্কা ছড়িয়ে চলেছেন আমার মনে হয় এটার বাস্তবতা নেই। আমরা এখনই হয়ত বেশি ভাবছি।" 


প্রসঙ্গত, ২০১৯'এর পুনরাবৃত্তি ২০২২'এ। আবার করোনার ছোবল। সেই চিন দিয়ে শুরু। ভারতে কী হবে? এই প্রশ্ন উঠছেই। কারণ চিনের পর করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সাব ভ্যারিয়েন্ট BF.7 ভারতেও পাওয়া গিয়েছে। 


চিনের লকডাউন বিরোধী আন্দোলন নিয়ে মুখরিত হয়েছিল বিশ্বও। চাপ বাড়ছিল প্রেসিডেন্টের ওপরও। এরপর চাপের মুখে ৭ ডিসেম্বর চিন কোভিড বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করে। ৮ ডিসেম্বরই চিনে এক হাজার জন করোনা আক্রান্ত হন। ৭ দিনে আক্রান্তের সংখ্যাটা পৌঁছে যায় ১৫ হাজারে। এক সপ্তাহে মৃত্যু হয় ৭ হাজার নাগরিকের। কিন্তু ৭ ডিসেম্বরের পর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে চিন। ফলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা স্পষ্টভাবে সামনে আসছে না। 


আরও পড়ুন, চিনে ভয়ঙ্কর হারে বাড়ছে করোনা! ফের কি ফিরতে চলেছে লকডাউন?


যদিও চিনে করোনা ভয়াবহতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষও। তিনি বলেন, "চিনের খবর নিয়ে ডাউট আছে। যে দেশে কয়েকদিন আগে মানুষ লকডাউন বিরোধী আন্দোলন করল, সেখানে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হবে! আন্দোলন থামানোর পরিকল্পনা কিনা জানি না।" 


বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনে করোনার এবারের ঢেউ হতে চলেছে সবথেকে মারাত্মক। সংক্রমণের ঢেউ চূড়ায় পৌঁছোলে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষে পৌঁছে যেতে পারে।  চিনের Institute for Health Metrics and Evaluation'এর একটি মডেল অনুযায়ী, ২০২৩-এ চিনের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। আর আগামী বছরে চিনে করোনায় মৃত্যু হতে পারে ১৬ লক্ষ মানুষের। 


করোনার তিনটে ঢেউ ছারখার করে দিয়েছিল ভারতকে। আগামী দিনে কী অপেক্ষা করছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তা নিয়ে এখনই বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।