সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুঁচুড়া: আয়া না রাখলে চিকিৎসা হবে না, এমনই নাকি নিদান দিয়েছিলেন নার্স। সেই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। সেই আবহেই চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে বিক্ষোভে শামিল হলেন সরকারি নার্সরা। বিধায়ককে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি অভিযুক্ত নার্সের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলেও দাবি জানিয়েছেন। (Chinsurah Imambara Hospital)


সম্প্রতি খবররে শিরোনামে উঠে আসে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল। অভিযোগ, হাসপাতালে কর্মরত নার্স বন্দনা দাশগুপ্ত এক রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আয়া না রাখলে চিকিৎসা হবে না, এমন নিদানও নাকি দেন ওই নার্স। শুক্রবার রাতে বিষয়টি সামনে আসতেই হাসপাতালে হাজির হন চুঁটুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। অভিযুক্ত নার্স এবং সুপারকে ডেকে তিনি ধমক দেন বলে অভিযোগ ওঠে। (Asit Mazumdar)


অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছন অসিত। সুপার এবং ওই নার্সকে ডেকে ধমক দেন তিনি। তাঁদের হাসপাতালে থাকার অধিকার নেই বলে জানান। শুধু তাই নয়, ব্যবস্থা না নিলে সেখানে ধর্নায় বসবেন তিনি। এর পর নাকি হাসপাতালের সুপার এবং অ্যাস্টিস্ট্যান্ট সুপার অসিতকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, ওই নার্সকে সরানো হয়েছে। তাঁকে সাসপেন্ড বা বদলি করা হবে। সেকথা শুনেই নাকি হাসপাতাল ছাড়েন অসিত।


আরও পড়ুন: Purulia News: ঝালদায় স্কুলের দেওয়াল ভেঙে মিড ডে মিলের চাল, ডাল খেয়ে তাণ্ডব বুনো হাতির পালের


সেই ঘটনার জেরেই মঙ্গলবার হাসপাতালে হাসপাতালের নার্সিং স্টাফরা হাতে কালো ব্যাজ পরে বিক্ষোভে শামিল হন। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সুপারের ঘরে ঢুকে, তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। নার্সেস ইউনিটের তরফে জানানো হয়েছে, অসিতকে এসে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে, হাসপাতালের নার্সের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না এবং হাসপাতাল থেকে আয়া সরাতে হবে। ঠিক করতে হবে রোগী এবং কর্তব্যরত নার্সের অনুপাত। কর্তৃপক্ষ দাবিদাওয়া না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। 


হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানিয়েছেন, নার্সদের দাবিদাওয়া তিনি CMOH-এর কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এ নিয়ে যোগাযোগ করলে অসিত বলেন, "ওঁরা আন্দোলন করতেই পারেন। ওখানে এত রাতে হেমা মালিনীর নাচ দেখতে যাইনি। আমি সাধারণ মানুষের জন্য গিয়েছি। আমার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।"


অসিত আরও বলেন, "একটি মেয়ে অভিযোগ করেছে। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা জনপ্রতিনিধি। ওই নার্স দিদি যে সংলাপ আউড়ে গেলেন, তা বন্ধ করতে দু'মিনিট সময় লাগত আমার। কিন্তু ওঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থাও আমরা করেছি।"এ প্রসঙ্গে বিজেপি-র সুরেশ সাউ বলেন, "এর আগেও, নার্সদের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন বিধায়ক। হাসপাতালের মহিলা বিভাগে ঢুতে সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে যে তাণ্ডব করেছেন, তাকে ধিক্কার জানাই। ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।"