অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বিচারপতি অমৃতা সিন্হার স্বামীকে তৃতীয়বার তলব করল সিআইডি (CID Summons Justice Amrita Sinha Husband)। সূত্রের খবর, পেশায় আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে-কে,আগামীকাল ভবানী ভবনে মোবাইল ফোন জমা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২২ ডিসেম্বর ভবানী ভবনে সশরীরে হাজিরারও নির্দেশ রয়েছে। বিচারপতি সিনহার স্বামীর বিরুদ্ধে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের একটি মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে। বিধাননগর দক্ষিণ থানার অন্তর্গত এলাকায় দায়ের ওই মামলায় শনিবার ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ফের তলব করা হল তাঁকে। 


বিশদ...
এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে আইনজীবী ও রাজনৈতিক মহলে। শিক্ষা দুর্নীতিকাণ্ডে একাধিক মামলার আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, 'বিচারপতি অমৃতা সিন্হার পরিবারের লোককে হেনস্থাকে করা হচ্ছে। অভিষেকের হয়ে মামলা লড়া আইনজীবীই এই মামলা লড়ছেন। সেই আইনজীবীই এবার এই মামলায় রাজ্য সরকারের হয়ে লড়ছেন। এটা কোনও ঘটনাই নয়।' সুর চড়িয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়ের উৎস জানতে ইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। তারপর ৭২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে বিচারপতির স্বামীকে তলব করল সিআইডি। এভাবে বিচারপতিদের ভয় পাওয়াতে চাইছে তৃণমূল শাসিত সরকার।' সিপিএম নেতা তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের বক্তব্য  'বিচারপতিকে বিরক্ত করার জন্য সিআইডি-কে চাপ দেওয়া হচ্ছে।' 


তৃণমূলের বক্তব্য...
জোড়াফুলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য জানাচ্ছেন, 'কে কার মক্কেল হবেন, তা দিয়ে আইনজীবীর কী লড়াই হবে, সে কথা পেশাদারিত্ব নিয়ে কেউই বলতে পারেন না। আর যদি মক্কেলের ইতিহাস নিয়ে টানাটানি করেন, তা হলে নিজেদের মক্কেলের ইতিহাসও তো দেখা দরকার।' প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে গত ১২ ডিসেম্বরের শুনানিতে অভিষেক-রুজিরার সম্পত্তির প্রসঙ্গ উঠেছিল। আয়ের উৎস খতিয়ে দেখা হয়েছে কি না, ইডির কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। সঙ্গে মন্তব্য করেন, 'নথি থেকে দেখা যাচ্ছে, এই বিপুল সম্পত্তির বেশিরভাগই ২০১৪ সালের পরে। এই অল্প সময়ের মধ্যে এই বিপুল সম্পত্তি! আর এই সময়ের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতি।' এরও আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের বাকি ডিরেক্টরদের সম্পত্তির নথি জমা দিতে দিয়েছিলেন বিচারপতি সিন্হা। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান অভিষেক। সিঙ্গল বেঞ্চের সিংহভাগ নির্দেশকেই বহাল রাখে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। এরপর, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শুক্রবার, এই আবেদনই খারিজ হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টে। 


আরও পড়ুন:সেরা শান্তিপূর্ণ জেলার শিরোপা পেল ডায়মন্ড হারবার, তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিলন শুভেন্দু