ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) ধৃত এনামুল হককে (Enamul Haque) তিহাড় জেলে (Tihar Jail) গিয়ে জেরা করতে চায় সিআইডি (CID)। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) রঘুনাথগঞ্জের একটি মামলার সূত্রে সিআইডি এনামুলকে জেরা করতে চায়। এর আগে এনামুলের তিন পলাতক ভাগ্নের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সিআইডি। ওই তিনজনের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথিও উদ্ধার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এনামুল হক আপাতত ইডি-র জেল হেফাজতে রয়েছে। তিহাড় জেলে রয়েছে সে। 


সিআইডি-র নজরে এনামুল হকের তিন ভাইপো-


গরুপাচার মামলায় সিআইডি-র নজরে এনামুল হকের তিন ভাইপো। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে এনামুলের তিন ভাইপো হুমায়ুন কবির, জাহাঙ্গির আলম ও মেহেদি হাসানের সংস্থা JHM গোষ্ঠীর দুটি অফিসে তল্লাশি চালানো হয় সম্প্রতি। একই বিল্ডিংয়ে ওই দুটি অফিস সিল করে দেন সিআইডি অফিসাররা। এর আগে গরুপাচার মামলায় এনামুল ঘনিষ্ঠ জেনারুল শেখকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন এনামুল হক। 


গরু পাচার চক্রের কিংপিন এবং অভিযুক্ত ব্যবসায়ী এনামুল হককে আগেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সম্প্রতি এনামুল হকের এক ঘনিষ্ঠের হোটেল সিল করে দেয় সিআইডি। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকার ওমরপুর মোড়ে ওই হোটেলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালান সিআইডি অফিসাররা। পুলিশ সূত্রে খবর, তারপর হোটেলটি সিল করে দেওয়া হয়। সূত্রের দাবি, ওই হোটেল থেকেই একসময় মুর্শিদাবাদে গরু পাচারের কারবার নিয়ন্ত্রণ করা হত। তার আগে, রঘুনাথগঞ্জের ইছাখালি এলাকায় আলম শেখ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে সিআইডি তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়।


সম্প্রতি বীরভূমে এনামুল হকের সম্পত্তির খোঁজে গিয়ে অনুব্রত-র অনুষঙ্গ খুঁজে পায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, বীরভূমে এনামুল হকের নামে বেশ কিছু জমির সন্ধান মিলেছে। ওই জমিগুলি ২০১৭ সালে বাজারদরের থেকে কম দামে কেনা হয়েছিল বলে দাবি। অনুব্রত মণ্ডলের সহায়তায় এনামুল কম দামে জমি পেয়েছিলেন, কি না, খতিয়ে দেখছে সিবিআই।


সিবিআই (CBI) সূত্রে দাবি, বোলপুরের সুরুল মৌজায়, এনামুলের নামে প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে ২ বিঘা ২ কাটা জমি রয়েছে এনামুলের হকের স্ত্রী রাশিদা বিবির নামে। এছাড়া, আরও ১২ কাঠা জমির হদিশ পাওয়া যায়। সেটি রয়েছে মাসুদা খাতুনের নামে। এই মাসুদা খাতুন এনামুল হকের মেয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশেরও দাবি, এই জমি এনামুলের। সুরুলে একটি মার্বেলের দোকানের পিছনের একটি জমিও নাকি এনামুলের। স্থানীয়দের একাংশের দাবি তেমনটাই। সেখানে অবশ্য উঠে এসেছে আরও একটি নাম। সিবিআই সূত্রে দাবি, এই জমির অংশীদার গরুপাচার মামলায় অভিযুক্ত এনামুল হকের ডান হাত বলে পরিচিত আব্দুল লতিফ। 


এই সব জমিই নাকি তৎকালীন বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে কেনা হয়েছিল। কীভাবে এত জমি বাজারের চেয়ে কম দামে এনামুলের হাতে এল তারই উত্তর খুঁজছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর, এই সমস্ত তথ্য আদালতে পেশ করা হবে।


আরও পড়ুন ; গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত এনামুল ঘনিষ্ঠের হোটেল সিল করল সিআইডি