রঞ্জিত হালদার ও হিন্দোল দে, কলকাতা: ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলের অন্দরে। এবার আরাবুল ইসলাম বনাম সওকত মোল্লা। তাঁদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড়। ভোজেরহাটে আরাবুলের অফিসে হামলার অভিযোগ উঠল সওকতের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ভাঙচুর চালানো হয় আরাবুল-ঘনিষ্ঠ আলবাবু মোল্লার গাড়িতে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সওকত অনুগামীরা। (Saokat Molla vs Arabul Islam)


আরাবুলের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে কর্মিসভা করেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক ও তৃণমূলের ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লা। সওকতের উপস্থিতিতেই সভা থেকে আরাবুল, তাঁর ছেলে হাকিমুল ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের হুঁশিয়ারি দেন তাঁর অনুগামী। আরাবুলের দাবি, এর পরই গতকাল বেওতা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোজেরহাটে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের অফিসে হামলা হয়। পোলেরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। (Bhangar News)


সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওই ভাইরাল ভিডিওতে যাঁকে হুমকি দিতে দেখা যায়, তিনি তৃণমূল নেতা বাহারুল ইসলাম। যিনি ভাঙড়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ও ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকতের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ভাইরাল ভিডিওয় বাহারুলকে বলতে শোনা যায়, "ও কখন বাড়িতে থাকে, কেউ জানে না। ভোরের দিকে বাড়ি যায়। ফেসবুকে টার্গেট করে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমরা যদি ওপারে দেখি, শত শত তৃণমূল কর্মী ওকে ঘিরে ধরে, ওর হাত-পা কুচে দেওয়া হবে সেদিন।"


ভিডিওটি সামনে আসতে অভিযোগ ওঠে যে, বাহারুল যাঁকে হুমকি দিচ্ছিলেন, তিনি আরাবুল-শিবিরের এক তৃণমূল নেতা। এরপরই একের পর এক ঘটনা ঘটতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সাতুলিয়া এলাকায় একটি চা-চক্রের আয়োজন করেন আরাবুল। অভিযোগ, সেখানে আরাবুল অনুগামীদের চড়াও হন সওকত অনুগামীরা। কোনও রকমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান আরাবুল।

পরের দিন আরাবুল-ঘনিষ্ঠ লালবাবু মোল্লার ভোজেরহাটের অফিসে সওকত মোল্লার অনুগামীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সওকতের লোকজনই হামলা চালিয়েছেন বলে দাবি করেছেন আরাবুল ঘনিষ্ঠ লালবাবু মোল্লা। অন্য দিকে, সওকত ঘনিষ্ঠ আক্রম মোল্লার দাবি, গাড়ি রাখা নিয়ে বচসা বাধে। স্থানীয় মানুষ জনই ভাঙচুর চালান। এর পর শনিরার আরাবুল ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেত্রীর বাড়িতেও হামলা চলে বলে অভিযোগ। 


পর পর এমন ঘটনায় সরাসরি সওকতের দিকে আঙুল তোলেন আরাবুল। তাঁর কথায়, "ভাঙড়ের মাটিতে হার্মাদ আজ তৃণমূলে এসে পুরনোদের উপর আক্রমণ করছে।" তাঁর ছেলেদের মেরে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলে দাবি করেন তিনি। এই নিয়ে ভাঙড়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ও ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পোলেরহাট থানা।