কলকাতা: কন্যাশ্রী প্রকল্পের ১২ বছর, ধনধান্য অডিটোরিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এই মাসের শেষের দিকে, আমরা ১২ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীকে সাইকেল দেব। যেমন প্রতিবছর দিই। এবারেরটাও পাবে, ক্লাস নাইনে যারা উঠেছেন। সবুজ সাথী চালু হওয়ার পর থেকে, এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৩৮ লক্ষ, ছাত্র-ছাত্রীকে আমরা সাইকেল দিয়েছি। ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। খরচটা যেখান থেকেই হোক জোগাড় করি, সংসার যারা চালায়, তাঁরা খরচাটাও জোগাড় করে অ্যাডজাস্ট করে নেয়। আমার গর্ব আজকে এই কারণে, আমাদের ৯৩ লক্ষের বেশি কন্যাশ্রী বাংলায়। আমি আগামী বছরে চাই এটা ১ কোটি হোক। কন্যাশ্রীর জন্য বিশেষ উদযাপন।'
আরও পড়ুন, সুপ্রিম কোর্টে পরিযায়ী শ্রমিক মামলার শুনানি, 'সন্দেহভাজনদের এভাবে আটক করা যায় না..'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'কন্যাশ্রী প্রকল্পে ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এখন সরকারি স্কুলে সবাই কন্যাশ্রী পায়। কলেজে ছাত্রীরা কন্যাশ্রী ২ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীরা কন্যাশ্রী ৩ পান। নেদারল্যান্ডসে প্রায় ৬০৭ টি প্রকল্প গোটা পৃথিবী থেকে আসে', তার মধ্যে কন্যাশ্রী প্রথম হয়েছে, বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, কন্যাশ্রী প্রকল্প শুরুর পর স্কুলছুটের সংখ্যা এখন শূন্য। মেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিন। তাঁদের আত্মনির্ভর হতে দিন। গবেষণার টাকা ইউজিসি বন্ধ করে দিয়েছে। সেই টাকা এখন আমরা দিচ্ছি। সব ভাষাই জানা উচিত, কিন্তু মাতৃভাষাকে ভুলবেন না। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বাংলার। দেশভাগের পর যাঁরা সবকিছু ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে চলে এসেছিলেন। তাঁরা তো এদেশেরই নাগরিক। আমরা যদি অন্য ভাষাকে সম্মান করি, তোমরা কেন বাংলা ভাষাকে সম্মান করবে না? নয়ডাতে বাংলা বললে বার করে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা আসত?'প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, কত বৈচিত্র, কত বাহার। বাংলা ভাষার মাধুর্য কোথাও পাবেন না। ইংরেজি শেখাটাও দরকার। আগে ক্লাস ৫ পর্যন্ত ইংরেজি বন্ধ ছিল, আমরা চালু করেছি। মাকে ভুলবেন না, মাতৃভাষাকে ভুলবেন না। সুভাষের মাটি, বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, চৈতন্যের মাটি। বিনয়-বাদল-দীনেশ-মাতঙ্গিনীর মাটি। বাংলার ৭০ শতাংশ লোক জেলে ছিল। তারপরে ছিল পঞ্জার। অনেকে ভেদাভেদ করে, কিন্তু যখন স্বাধীনতার আন্দোলন চলছে, দুর্গম গিরি কান্তার মরু..ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল ....হিন্দু না ওরা মুসলিম। স্বামীজি বললেন, ভারতের মাটিই মা। সুভাষ বললেন, রক্ত দাও। বাল্য বিবাহ রোধ করেছিলেন।বিদ্যাসাগর বর্ণপরিচয় লিখেছিলেন। মইলস্টোন দেখে সংখ্যা চিনেছেন। রামমোহন বাল্যবিবাহ ও সতীদাহ রোধ করেন। সেই বিল বাংলায় প্রথম হয়েছিল। আম্বেদকর বাংলা থেকে প্রথম নির্বাচিত হন। তিনি দাঙ্গা রোধ করেন। সংবিধান রচনা করেন। যারা সব কিছু ছেড়ে এসেছিলেন তাঁরা তো নাগরিক। '