অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: হাতির (Elephant News) সঙ্গে দুটি আলাদা জায়গায় সংঘর্ষ এড়াতে প্রধান ভূমিকা নিলেন রেলের লোকো পাইলট (Loco Pilot)। তাঁদেরই তৎপরতায় দাঁড়াল ট্রেন, এড়ানো গেল বড়সড় বিপত্তি। আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ডিভিশনের অন্তর্গত আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ির পথে এই দুটি ভিন্ন ঘটনা ঘটে।


কী ঘটেছে?
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের অন্তর্গত চালসা-নাগরাকাটা স্টেশনের মাঝে রেল ট্র‍্যাকের উপর একটি হাতি দেখতে পান আপ-ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট। লোকো পাইলট এসকে মালাকার এবং সহকারি এস. সাগর তক্ষণই ব্রেক কষেন। ফলে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। এর পর হাতি সরে জঙ্গলের পথে চলে যায়। ট্রেন বেড়িয়ে যায় নির্বিঘ্নে। অন্য দিকে, প্রায় একই এলাকায় দ্বিতীয়বার এক ঘটনা ঘটে দুপুর ৩টে ৩৩ মিনিটে। সেখানে আপ এলটিটি-কামাখ্যা কর্মভূমি ট্রেনের পথে হাতি এসে যায়। সেখানেও পাইলট ওয়াই অমিত এবং সহকারি সৌরভ কুমারের তৎপরতায় যাত্রী-সহ ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। প্রায় ৪ মিনিট অপেক্ষার পর হাতি ট্র‍্যাক থেকে সরে যায়। বেরিয়ে যায় ট্রেন। উত্তরবঙ্গে ট্রেনের লাইনে হাতি দেখা নতুন নয়। বহু বার এই জন্য় বিপজ্জনক পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। গত বছরের অগাস্টেই যেমন রেললাইনের উপর এক দলছুট হাতির দাপাদাপি দেখেছিলেন বানারহাটের মানুষজন। ঘটনায় আতঙ্কের হিমস্রোত বাসিন্দাদের মধ্যে। 


কী দেখা গেল?
সে দিন, হঠাতই একটি হাতি মরাঘাট এলাকায় ঢুকে বানারহাট কার্তিক ওঁরাও হিন্দি গভর্নমেন্ট কলেজের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ভিড় জমান এলাকার বহু মানুষ। পথচলতি নিত্যযাত্রী ও পর্যটকদের মধ্যে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। কিন্তু দিনের বড় সময় যে ভাবে হাতিটি দাপাদাপি করেছে, তাতে আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ে বড় অংশের মধ্যে। তিন-তিনটি চা বাগান, রেললাইন, জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক পেরিয়ে বানারহাট কার্তিক ওঁরাও হিন্দি গর্ভনমেন্ট কলেজের পাশে আসা ও রেতির জঙ্গল থেকে মরাঘাট জঙ্গলে ফেরার গোটা পর্বে সে যা করেছিল, তা হয়তো বছর পেরিয়েও অনেকে ভুলতে পারেননি। সব মিলিয়ে যথেষ্ট ভয়ের পরিবেশ ছিল ওই এলাকায়। ঠিক তার আগের দিন, মারা যাওয়ার আগে ভয়ঙ্কর দাপাদাপি করতে দেখা গিয়েছিল এক অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীকেও। আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের নিমতিঝোড়া চা বাগানের ওই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, বক্সা ব্য়াঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল থেকে আচমকাই একটি হস্তিনী ছুটে এসে ঢুকে পড়েছিল কালচিনি ব্লকের নিমতিঝোড়া চা বাগানে। তার পর হঠাৎ বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের দিকে ধেয়ে যায়। কিন্তু এতেই শেষ নয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আচমকা নানা দিকে খেয়ালখুশিমতো ছোটাছুটি শুরু করে। প্রায় ফাঁকা বাগানে তার এই অদ্ভুত আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছিল হাজির হাতেগোনা শ্রমিকদের। ওই পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় নিয়ে তাঁরা যখন ভাবছেন, ঠিক তখনই বাগানের ২ নম্বর কম্পার্টমেন্টের মধ্যে পড়ে যায় ওই হস্তিনী। খবর পেয়েই চলে আসেন বনকর্মীরা। কিন্তু তার আগে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। মারা যায় হস্তিনী।


আরও পড়ুন:চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার ঠিক আগে কেমন ছিল দৃশ্য ? বিক্রমের চোখে চাঁদে পা