সমীরণ পাল, কলকাতা: ব্যারাকপুরে সারদা মাল্টিসুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের শাসানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীর বিরুদ্ধে। এবার মোহনপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার, ব্যারাকপুরের সারদা মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে ৬৫ বছরের রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। এরপরই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের শাসাতে দেখা যায় বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীকে। ভাইরাল ভিডিও-য় ধরা পড়ে ছবি। গতকাল অভিযোগ পেয়ে মারধর, হুমকি-সহ চিকিৎসকদের ওপর হামলার ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে ব্যারাকপুরের ওই হাসপাতালে যান তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক। মৃতের পরিবার কোনও অভিযোগ করেনি, এক বহিরাগত হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসককে অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন। উত্তরপ্রদেশের গোবলীয় সংস্কৃতি এদের মধ্যে ঢুকেছে, নাম না করে কৌস্তভ বাগচীকে নিশানা করেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। পাল্টা কৌস্তভ বাগচী বলেন, "পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করানো হয়েছে। জনরোষ তৈরি হয়েছিল, আমি গেছিলাম বলে ভাঙচুর হয়নি।'' হাসপাতালের চিকিৎসক অমৃত ঘোষের অভিযোগ, "হাসপাতালে ঢুকে স্বাস্থ্যকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেন কৌস্তভ বাগচী। থানায় জানিয়েছি, পরিবার কোনও অভিযোগ করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কিত।''

মঙ্গলবার, ব্যারাকপুরের সারদা মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে ৬৫ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, কোন প্যাকেজে চিকিৎসা হবে, তা চূড়ান্ত না হওয়ায় রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, সেই কারণেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। এরপরই হাসপাতালে পৌঁছন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী। এই ঘটনায় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে হাসপাতালে ঢুকে গুন্ডাগিরির অভিযোগে মুখ্যসচিবের কাছে ই-মেল করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম। কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারি এবং চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় কৌস্তভ বাগচী বলছেন, " CCTV ফুটেজটা আমরা দেখতে চাই, অক্সিজেনটা কে খুলছে? যখন আপনি বলেননি RMO,তাহলে যদি এটা কেউ খুলে থাকে ইটস আ প্ল্যান ওয়ে টু কিল দ্যাট পার্সন। এটা তো একদম মামলা হবে এটাতে। RMO না বলার পরেও কে অক্সিজেন খুলেছে!CCTV ফুটেজটা না দেখা হলে, আমি আপনাদের বলছি, ঘেরাও হবে আজকে সারা রাত নার্সিংহোম। একটা লোককে বেরোতে দেব না। তারপরে কী সিচুয়েশন হয় দেখতে পাবেন।'' এবিষয়ে কৌস্তভ বাগচী বলেন, "আমি যেটা করেছি RMO-র সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেছি। কোনও আফশোস নেই। কারণ একজন সাধারণ মানুষের জীবন চলে গেছে এদের পয়সা রোজগারের মানসিকতার জন্য''