সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: কাঁথির টেন্ডার সংক্রান্ত মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI) তদন্তের নির্দেশ। টেন্ডার-মামলায় (Contai Tender Scam Case) সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। তদন্ত করে ৫ সপ্তাহের মধ্যে সিবিআই-কে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ। একই সঙ্গে, এ দিন টেন্ডার মামলায় মূল অভিযুক্ত রামচন্দ্র পান্ডাকে (ramchandra Panda) জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। 


টেন্ডার মামলায় মূল অভিযুক্ত রামচন্দ্র পান্ডাকে জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট


২০১৯ এবং ২০২০ সালে কাঁথি পুরসভার অন্তর্গত একটি টেন্ডার পান রামচন্দ্র। কিন্তু টেন্ডার পেয়েও তিনি কাজ শেষ করেননি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে দু'টি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। এর পর, গত ২৮ ডিসেম্বর আরও একটি এফআইআর দায়ের হয়। তাতে দেখা যায়, রামচন্দ্রের স্ত্রী-ই অভিযোগ করেছেন এবং তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে রামচন্দ্রকে।


এই তৃতীয় এফআইআর নিয়ে বুধবার বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। তিনি বলেন, "স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার স্বামী!" একই অভিযোগের ভিত্তিতে, একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিন-তিনটি এফআইআর দায়ের হয় কী ভাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। গোটা ঘটনায় সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। 


আরও পড়ুন: Governor Security Increased : 'জীবনের ঝুঁকি আছে', রাজ্যপালের নিরাপত্তা নিয়ে পদক্ষেপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের


তৃতীয় এফআইআর-টি রামচন্দ্রের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হলেও, আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় রামচন্দ্রের স্ত্রী জানিয়েছেন, কিছু প্রভাবশালী তাঁকে তুলে নিয়ে দিয়ে, জোর করে অভিযোগপত্র লিখিয়েছেন এবং তাতে সই করিয়েছেন। ওই অভিযোগপত্রে যা অভিযেগ রয়েছে, তাঁর অভিযোগ সেটি ছিল না। তার ভিত্তিতে গ্রেফতারও করা হয়নি রামচন্দ্রকে। 


রামচন্দ্রের স্ত্রী সেই হলফনামা দেখে এ দিন পুলিশের ভূমিকায় বিস্ময়ও প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। এর পরই বিষয়টি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেন তিনি। একই সঙ্গে সিআরপিএফ-কে মামলায় যুক্ত করে রামচন্দ্রের স্ত্রীকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিচতারপতি মান্থা জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে কাঁথি পর্যন্ত রামচন্দ্রের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার পথে সিআরপিএফ তাঁকে নিরাপত্তা দেবে এবং আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রাখতে হবে রামচন্দ্রের স্ত্রীকে। ২৮ ডিসেম্বর রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তৃতীয় এফআইআর-টিতে এ দিন স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি মান্থা। নিঃশর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। 


২৮ ডিসেম্বর রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তৃতীয় এফআইআর-এ স্থগিতাদেশ


যে বিষয়কে ঘিরে শোরগোল, সেটি কাঁথি পুরসভার শ্মশানের সংস্কারের টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। রামচন্দ্র সৌমেন্দু এবং অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে জানা যায়। ভুয়ো শংসাপত্রের মালিক রামচন্দ্রকে বরাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকি শ্মশানে স্টল তৈরিতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।