রুমা পাল, কলকাতা : রাজ্যপালের জীবনের ঝুঁকি আছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের (Health Ministry) গোয়েন্দা রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে। গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বাড়ানো হল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (C V Ananda Bose) নিরাপত্তা। রাজ্যপালের নিরাপত্তা বাড়াল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। জেড প্লাস নিরাপত্তা (Z+ Security) পাবেন রাজ্যপাল।


জগদীপ ধনকড়ের পর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হন সি ভি আনন্দ বোস। ধনকড় উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন লা গণেশন। এরপর গত নভেম্বর মাসে রাজভবনে স্থায়ীভাবে আসেন কেরলের বাসিন্দা সি ভি আনন্দ বোস।


এরাজ্যে তিনি আসার পর রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর সেখান থেকে বেরোন। সেই সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছিলেন, "রাজ্যপাল অত্যন্ত ভদ্র মানুষ। আশা করি, আর কোনও সমস্যা থাকবে না।"


প্রাক্তন IAS অফিসার সি ভি আনন্দ বোস কেরলের বাসিন্দা, হলেও কলকাতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অনেকদিনের। তিনিই জানিয়েছিলেন, বাংলার সঙ্গে, বিশেষ করে কলকাতার সঙ্গে আমার আবেগের সম্পর্ক। ব্যাঙ্কের কর্তা হিসেবে আমার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল কলকাতায়। আমি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রোবেশনারি অফিসার ছিলাম। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করেছি।


কর্মজীবনে সি ভি আনন্দ বোস ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মুখ্যসচিব ও কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব সামলেছেন। সি ভি আনন্দ বোস কেরল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক এবং BITS, পিলানি থেকে Ph.D। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন ১৫টি স্বর্ণপদক-সহ ১০০’রও বেশি পুরস্কার পেয়েছিলেন।


মুসৌরির লালবাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পড়ার সময় পরপর তিন বছর তিনি সেরা বক্তা হিসেবে বিতর্কে জয়ী হয়েছিলেন। পেয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু ফেলোশিপও। ১৯৭৭ সালে তিনি IAS হিসেবে কাজে যোগ দেন। জেনেভার ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিউশন এনার্জি অর্গ্যানাইজেশনে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সি ভি আনন্দ বোস।


অ্যাটমিক এনার্জি এডুকেশন সোসাইটির চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৩৩টি পুরস্কার পেয়েছেন। আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে তাঁর উদ্যোগগুলিকে গ্লোবাল বেস্ট প্র্যাকটিস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। এদেশেও ন্যাশনাল হ্যাবিট্যাট পুরস্কার জিতেছেন তিনি। ২০১১ সালে অবসরের পর থেকে একাধিক বই লিখেছেন সি ভি আনন্দ বোস। 


আরও পড়ুন ; ধনকড়-অধ্যায় অতীত, নয়া রাজ্যপাল 'নিপাট ভদ্রলোক', বললেন মমতা