শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: সোনার দোকানে একের পর এক চুরি ঘটনায় ইতিমধ্যেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে রাজ্যের। তার কারণ এখন আর শুধুই চুরিতে আটকে নেই। সোনার দোকানে ইতিমধ্যেই হামলা চালিয়ে পরপর শ্যুটআউটের ঘটনাও ঘটেছে। আর এবার এতকাণ্ডের পরও ফের ভুগতে হল কোচবিহারের তুফানগঞ্জের আরও এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে। 


তুফানগঞ্জ ১ নং ব্লকের ধলপল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ছাটারামপুর বাজার এলাকায় সোনার দোকানে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই এলাকায়।  জানা গিয়েছে, তাপস বিশ্বাস নামে এক স্বর্ণ  ব্যবসায়ীর দোকানে রাতের অন্ধকারে  শাটার ভেঙে দুঃসাহসিক  চুরির ঘটনা ঘটেছে।সকালে পাশের দোকানদার সুকুমল বিশ্বাস দোকানে এসে দেখতে পান সোনার দোকানের শাটার ভাঙা। তড়িঘড়ি দোকানের মালিকে খবর দেন। খবর চাউর হতেই দোকানের সামনে ভিড় জমে যায় দোকানের সামনে। দোকানের মালিক জানান, নগদ ৫০ হাজার  টাকা-সহ লক্ষাধিক টাকার সোনা রুপো  নিয়ে গেছে চোরের দল।  ঘটনা স্থলে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করেছে।


'সোনার দোকানে ডাকাতি', প্রায়শই এই তিনটি শব্দ খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। এখানেই শেষ নয়, এই ডাকাতির কারণে অতীতে 'খুন'ও হতে হয়েছে সোনার দোকানের মালিককে। প্রশ্ন একটাই 'নিরাপত্তা' কোথায় ? কার্যতই ঘুম উড়েছে রাজ্যের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। আর এই প্রশ্নের মাঝেই একইদিনে রাজ্যের দুটি জেলা  রানাঘাট ও পুরুলিয়ায় ২টি সোনার দোকানে পরপর ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভি-র সেই ভয়াবহ ফুটেজ ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। ডাকাতির এই ঘটনা ফের চোখে আঙুল দেখিয়ে দিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বর্তমান নিরাপত্তার চেহারাটা এই মুহূর্তে কোথায় দাঁড়িয়ে ?


রাজ্যের বুকে এখনও ব্যারাকপুরের শ্যুটআউটের ঘটনা জ্বলজ্যান্ত।এর আগে ২৪ মে ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে ভরা বাজারে সোনার দোকানে শ্যুটআউটের ঘটনা ঘটেছিল। ডাকাতিতে বাধা দিতে গেলে সোনার দোকানের মালিককে গুলি করে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের একটি সোনার দোকানে ঢুকেও মালিককে গুলি করার ঘটনার সাক্ষী রাজ্য।সম্প্রতি ব্যারাকপুরের ঘটনা ঘটেছিল মালদাতেও। ডাকাতদের বোমায় নিহত হন সিভিক ভলান্টিয়ার।


আরও পড়ুন, ২ রাত পার, রাজ্যপাল দেখা না করা অবধি ধর্নার হুঁশিয়ারি অভিষেকের


চাঁচলের মালতিপুরে ভরসন্ধ্যায় ডাকাতির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন দোকানের মালিক। দোকানে ডাকাতির পরে হয়েছিল বোমাবাজিও। তাতেই সিভিক ভলান্টিয়ারের মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর। সোনার দোকানের মালিকের পায়ে গুলি চালিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দিয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল থেকে ১৫ কিমি দূরে কাশেমপুরে ডাকাতদের বাধা দেওয়ায় সিভিক ভলান্টিয়ার খুন হয়েছিলেন।একুশ সালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলিতে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীও খুন হয়েছিলেন। কিন্তু মাঝে বাইশ পেরিয়ে তেইশ সালে পা দিলেও বদলায়নি ছবি। আর এবার একইদিনে পরপর দুই ডাকাতির ঘটনায়, ফের বেআব্রু হয়ে পড়ল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার চাদর।