কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার অভিযোগকে ঘিরে সরগরম কোচবিহারের সিতাই। আজ সিতাই গিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি, চেয়ারম্যান  বর্মন, ও সিতাইয়ের বিধায়ক। তৃণমূলের অভিযোগ, 'বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গতকাল ওই পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালায়। পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।' 


 সিতাইয়ে তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস পরিদর্শন করেন আজ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিত্‍ দে ভৌমিক, চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, ও সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া।  প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই কোচবিহারে দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উদ্দেশ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ-র বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি।   দিনহাটার সভা থেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘ভোটে জেতার পরে আর এলাকায় ঢোকেননি নিশীথ প্রামাণিক। দাড়ি-গোঁফ উপড়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ অশান্তি করতে এলে ফোন করে জানাবেন। সে যাতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেল থেকে ছাড়া না পায়, সেই ব্যবস্থা করব।’ তারপরেই  কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে 'হামলা'কাণ্ডে বিতর্ক নয়া মোড় নিয়েছে।


আগামী বছর ফেব্রুয়ারি (February) বা এপ্রিলে হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট তবে এখন থেকেই চড়তে শুরু করেছে হুমকি-হুঁশিয়ারির পারদ। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সামনে এসেছিল হিংসার ছবি। সেই ভোট হয়েছিল রাজ্য পুলিশ দিয়ে। এবারের পঞ্চায়েত ভোটও, রাজ্য পুলিশ দিয়েই হতে চলেছে বলে, রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। যা শুনে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, ২০২৩’এও তাহলে ২০১৮’র পুনরাবৃত্তি হবে না তো? এই প্রেক্ষাপটেই পঞ্চায়েত প্রসঙ্গে, সরাসরি হুমকির সুর শোনা গেল, দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর গলায়। কিছুদিন আগেই উদয়ন গুহ (Udayan Guha) এবং তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের মুখে শোনা গিয়েছিল দাঁত উপড়ে নেওয়ার হুমকি। শাসকদলকে পাল্টা আক্রমণ করেছে বিরোধীরা।


আরও পড়ুন, অনুব্রতর লটারি তরজা! বোলপুরের দোকানের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ CBI-এর


অপরদিকে,  বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই, ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কোচবিহারের দুই প্রবীণ তৃণমূল নেতার মুখে শোনা গেল দু’রকম কথা। তাও আবার একই মঞ্চে, ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভুল পদক্ষেপের কথা স্বীকার করলেন একজন। অন্যজন দাবি করলেন, তিনি জেলা সভাপতি থাকাকালীন কোনও অশান্তিই হয়নি। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী উদয়ন গুহর কথায়,'২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আমাদের খানিকটা পদক্ষেপ ভুল হয়েছিল।’’ অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, 'আমি যখন সভাপতি ছিলাম কারও মাথা ফাটেনি, কোমর ভাঙতে হয়নি।’