শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : ফেসবুক পোস্টের (Facebook Post) পর, এবার দলের পুরনো কর্মীদের মান ভাঙাতে তাঁদের বাড়ি যাওয়ার উদ্যোগ নিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindra Nath Ghosh)।পঞ্চায়েত ভোটের আগে কোচবিহারে (Cooch Behar) পুরনোদের মাঠে নামাতেই এই উদ্যোগ, দাবি তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতির। নিজে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন বলেই পুরনো কর্মীদের কথা মনে পড়েছে, কটাক্ষ বিজেপির।
মান ভাঙাতে মাঠে
দলের পুরনো কর্মীরা ভাল নেই। ২ দিন আগেই সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এবার তৃণমূলের (TMC) পুরনো কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, তাঁদের সক্রিয়ভাবে ময়দানে নামানোর উদ্যোগ নিলেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, 'পুরনো কর্মীরা অনেকে বসে আছেন। ক্ষোভ বিক্ষোভ আছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে তাঁদের বাড়ি যাব। অনেকে গোঁসা অভিমান করে আছেন তাদের দলের মূল স্রোতে ফেরাতে হবে। শিকড় দুর্বল হলে গাছ সবল হতে পারে না।'
কোচবিহারে আদি-নব্য তৃণমূলের বিবাদ !
এই উদ্যোগকে ঘিরে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তৃণমূলের অন্দরে ফের আদি-নব্যের বিভেদ-জল্পনা জোরাল হয়েছে কোচবিহারে। জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূলে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। অন্যদিকে উদয়ন গুহ, পরেশ অধিকারী-সহ মন্ত্রী-বিধায়করা রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এমনকি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিত্ দে ভৌমিকও পালাবদলের পর তৃণমূলে এসেছেন।
আর তা নিয়েই কোচবিহারে বারবার প্রকাশ্যে এসেছে শাসকদলের আদি-নব্যের দ্বন্দ্ব। এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংঘাত ভুলে পুরনো কর্মীদের মাঠে নামানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এই ইস্যুতে বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা সভাপতিও। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি অভিজিত্ দে ভৌমিক বলেছেন, 'পুরনো কর্মীদের কাছে যেতে হবে। রবি ঘোষ, উদয়ন গুহ-সহ সবাই মিলে চেষ্টা করব যাতে এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ করা যায়।'
কটাক্ষ বিজেপির
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের এই উদ্যোগ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেছেন, 'তৃণমূল একটা প্রাইভেট কোম্পানি। এখানে পোস্ট একটাই। যখন উনি নিজে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন তখন পুরনো কর্মীদের কথা মনে পড়ছে। তৃণমূলে রাজনৈতিক কর্মীদের মূল্য নেই।'
২০২১-এর বিধানসভা ভোটে কোচবিহারে ৯টির মধ্যে ৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এবার কি পুরনো কর্মীদের হাত ধরে পঞ্চায়েত ভোটে ঘুরে দাঁড়াবে তৃণমূল? সেটাই এখন দেখার।