কোচবিহার: সীমান্ত থেকে দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। কোনও গরুও উদ্ধার হওয়ার খবর মেলেনি। তাহলে গরুপাচারের (Cattle Smuggling) প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে, কোচবিহারে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSf) গুলিতে যুবকের মৃত্যু ঘিরে উঠে আসছে এমন একাধিক প্রশ্ন। সেই আবহে রবিবার নিহতের বাড়িতে পৌঁছল তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধিদল। হত্যা করে মিথ্যে যুবককে গরুপাচারকারীর তকমা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শাসকদলের।
কোচবিহারে বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত যুবকের বাড়িতে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল
রবিবার কোচবিহারে নিহত যুবকের বাড়িতে পৌঁছন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দলও সেখানে পৌঁছয়। নিহত যুবকের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ঠিক কী ঘটেছিল, আগাগোড়া শোনেন। গোটা ঘটনায় রাজ্য সরকারের তরফে পরিবারটিকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও এ দিন অভিযোগ তোলেন উদয়ন। তিনি বলেন, "এর মধ্যে রাজনৈতিক চক্রান্ত আছে। কারণ এখানে যে সব জওয়ান আছে, তারা বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে আসে। তাদের মনে হয় বলে দেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গে নানা ভাবে মানুষের ওপর জুলুম করার জন্য যেহেতু তৃণমূল শাসিত রাজ্য। দিনহাটা সিতাই তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে এখানে আমাদের কর্মীদের নানা ভাবে অত্যাচার করা হয়।"
আরও পড়ুন: Job Agitation : বড়দিনে উৎসবমুখর বাংলা, এখনও হকের চাকরির দাবিতে ধর্না চাকরিপ্রার্থীদের
এর পাল্টা কোচবিহারে বিজেপি-র জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুকুমার রায় বলেন, "উদয়ন গুহ এর আগে বহুবার সেনাবাহিনীকে অপমান করেছেন। এবার তো চরম অপমান করলেন। বলছে বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে আসে। এখানে এসে বিজেপির রাজনীতি করে। এটা সেনাবাহিনীকে চরম অপমান।"
শনিবার সকালে গীতালদহের ঘোষপাড়ায়, বিএসএফ-এর বুলেটে মৃত্যু হয় ২৪ বছরের প্রেমকুমার বর্মনের। বিএসএফ-এর তরফে দাবি করা হয়, সকালে ওই এলাকা দিয়ে গরুপাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। তখন বাধা দিলে, পাল্টা হামলা চালায় পাচারকারীরা। এরপরই রবার বুলেট ছোড়া হয়। তাতেই মৃত্যু হয় যুবকের।
গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ মানতে চায়নি মৃতের পরিবার
যদিও গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ মানতে চায়নি মৃতের পরিবার। বেঙ্গালুরুতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত প্রেম জমিতে চাষের কাজ দেখতে গিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁদের। শনিবারই দিনহাটা থানায় বিএসএফের গীতালদহ আউটপোস্টের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন নিহত যুবকের কাকা। এর পর রবিবার সকালে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল গীতালদহের ঘোষপাড়ায় নিহত যুবকের বাড়িতে যায়। উদয়ন ছাড়াও দলে ছিলেন সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বাসুনিয়া, কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক এবং জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন।