শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচবিহারের (Coochbehar) বড়দেবীর পুজোর ইতিহাস ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো। দুর্গা এখানে পূজিতা হন বড়দেবী রূপে। কোচবিহারের বড়দেবীর পুজোর দায়িত্বে রয়েছে দেবোত্তর ট্রাস্ট। এই ট্রাস্ট পর্যটন দফতরের অধীনে। তাই পুজোর যাবতীয় খরচ মেটায় রাজ্য সরকার। একসময় রাজারা দিলেও, বর্তমানে মহাষ্টমীর দিন প্রথম অঞ্জলি দেন জেলাশাসক। এরপর সাধারণ মানুষ অঞ্জলি দেন। মহাষ্টমীর দিন কোচবিহারের বড়দেবীর পুজোয় পাঁঠা বলি, পায়রা বলির পাশাপাশি, মোষ বলিও দেওয়া হয়।


বড়দেবী রূপে পূজিতা দুর্গা: কোচবিহারের ঐতিহ্য়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে বড় দেবী বা বড় মা।কথিত আছে, মহারাজা বিশ্ব সিংহ বড় দেবীর পুজোর সূচনা করেন। এও শোনা যায়, মহারাজা নরনারায়ণের আমলে এই পুজো শুরু হয়। প্রায় ৫০০ বছরের ধরে চলা বড় দেবী বা বড় মার পুজোকে কেন্দ্র করে রয়েছে নানা কাহিনি।প্রতিমা এবং পুজো পদ্ধতি, দু'ক্ষেত্রেই স্বতন্ত্র এই পুজো।

বড় দেবী রক্তবর্ণা। মায়ের সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের পরিবর্তে থাকেন দুই সখী জয়া ও বিজয়া। দেবীর বাহন বাঘ ও সিংহ। প্রাচীন তালপাতার পুঁথি থেকে মন্ত্র উচ্চারণ করে আবাহন করা হয় বড় দেবীকে। অষ্টমীর দিন মহিষ বলি হয়। এছাড়াও পায়রা, পাঁঠা বলি হয়। বিসর্জনের সময় শূকর বলি দেওয়া হয়। দশমীর দিন মন্দিরের পাশেই যমুনা দিঘিতে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রাজ্য় পর্যটন দফতরের অধীনস্থ ট্রাস্ট বোর্ড। বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি অসম থেকেই প্রচুর মানুষ প্রত্য়েক বছর বড় দেবীকে দর্শন করতে আসেন। এক সময় রাজারা প্রথমে পুষ্পাঞ্জলি দিতেন। বর্তমানে মহাষ্টমীর অঞ্জলি দেন জেলাশাসক। 


অন্যদিকে, প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো মহিষাদল রাজবাড়ির (Mahishadal Rajbari) দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023)। ১৭৭৬ সালে মহিষাদলের রানি জানকীদেবীর আমলে দুর্গাপুজো শুরু হয়। প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর আচার। বনেদিয়ানার জৌলুস কমলেও এখনও সাধারণ মানুষ ভিড় জমান পুজো দেখতে। আগে তিথি অনুযায়ী, সপ্তমীতে ৭ মণ, অষ্টমীতে ৮ মণ চালের ভোগ নিবেদন করা হত। সন্ধিপুজোয় কামান দাগার রেওয়াজ থাকলেও এখন তা বন্ধ। শিকারের জন্য রাজ পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করা তরোয়াল এখন দেবী মূর্তির পায়ের কাছে রাখা থাকে। রীতি মেনে করা হয় তরোয়াল পুজো। 


আরও পড়ুন: Mahishadal Rajbari Durga Puja: প্রতিপদ থেকেই উৎসবের সূচনা, রীতি মেনে তরোয়াল পুজো মহিষাদল রাজবাড়িতে