শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: সম্পত্তি কর বাবদ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (North Bengal State Transport Corporation)। কোচবিহার পুরসভা (Coochbehar Municipality) সূত্রে এমনই খবর। বিপুল বকেয়ার দায় কার? পরিবহণ নিগমের বর্তমান ও প্রাক্তন চেয়ারম্যানের মধ্যে তা নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন।
কর নিয়ে টানাপোড়েন কোচবিহার পুরসভায়: রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আর পার্থপ্রতিম রায়, কোচবিহার জেলায় তৃণমূলের এই দুই নেতার অম্ল-মধুর সমীকরণ অজানা নয়। পুরসভায় সরকারি সংস্থার বকেয়া কর নিয়ে ফের প্রকাশ্যে চলে এল তাঁদের টানাপোড়েন। অর্থ সঙ্কটে ভুগছে তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভা। চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সেকথা জানিয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
কোচবিহার পুরসভা সূত্রে দাবি, বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি কর বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম বা NBSTC-র বকেয়া সম্পত্তি করের পরিমাণ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। জেলা পরিষদের বকেয়া প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা। কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যালের বকেয়া ৭১ লক্ষ টাকা এবং পূর্ত দফতরের বকেয়া সম্পত্তি করের পরিমাণ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। বকেয়া সম্পত্তি কর আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলিকে নোটিস পাঠাতে শুরু করেছে পুরসভা।
কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে রয়েছেন পার্থপ্রতিম রায়। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম এবং কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান এখন তিনি। আর এই দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া সম্পত্তি করের পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা। কোচবিহার পুরসভা চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এনবিএসটিসির-ই বাকি রয়েছে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। আমরা বলছি দিয়ে দিতে।‘’
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পুরনো রেকর্ড টেনে এনে খোঁচা দিতে ছাড়েননি NBSTC-র বর্তমান চেয়ারম্যান। এনবিএসটিসি- র চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমি তো এনবিএসটিসিতে ৬ মাস আর কোচবিহার মেডিক্যালে ৩ মাস এসেছি। এনবিএসটিসির টাকা বাকি ২০০৮-০৯ সাল থেকে। এর মধ্যে রবিবাবু চেয়ারম্যান ছিলেন। মিহির গোস্বামী ছিলেন। সৌরভ চক্রবর্তী ছিলেন। গৌতম দেব ছিলেন। অনেকেই ছিলেন। চেষ্টা করব দ্রুত মেটানোর।’’
দুই তৃণমূল নেতার কর টানাপোড়েন ঘিরে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “এটা গিমিগ। রবিবাবু বলছেন মিটিয়ে দিতে আর পার্থ বলছেন আগেকার কথা। মানুষের আই ওয়াশ। বাস্তব হল কোচহবিহার পুরসভা ঋণের দায়ে জর্জরিত।’’ শেষ পর্যন্ত পুরসভা বিপুল বকেয়া করের কতটা আদায় করতে পারে, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: Arms Recover Update: বাজেয়াপ্ত অটো থেকে উদ্ধার বোমা-অস্ত্র-গুলি! হরিদেবপুরের ঘটনায় নয়া তথ্য