শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: আগামীকাল কোচবিহারের (Coochbehar) শীতলকুচিকাণ্ডের (Sitalkuchi) বর্ষপূর্তি পালন করবে শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটি। চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। দিনটিকে আলাদাভাবে পালন করবে তৃণমূলও (TMC)। এদিকে, ১ বছর পরেও কেউ শাস্তি না পাওয়ায়, ক্ষুব্ধ বিধানসভা ভোটের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ৫ জনের পরিবার।
শীতলকুচিকাণ্ডের বর্ষপূর্তি
রবিবার ১ বছর পূর্ণ হচ্ছে অভিশপ্ত দিনের। গতবছরের ১০ এপ্রিল। চতুর্থ দফার বিধানসভা ভোটের এই দিনেই, রক্তে ভিজেছিল কোচবিহারের শীতলকুচির মাটি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় পাঁচজনের।
ভয়ঙ্কর সেই ঘটনার পর, এখন কেমন আছে হতভাগ্য পরিবারগুলো? তারই খোঁজ নিতে গ্রামে গিয়েছিল এবিপি আনন্দ। এলাকায় এখন শহিদ দিবস পালনের চূড়ান্ত ব্যস্ততা।
প্রথমবার ভোট দিতে গিয়েই প্রাণ যায় পাঠানটুলির বাসিন্দা আনন্দ বর্মনের। দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন তিনি। এরপর হোমগার্ডের চাকরি, সরকারি ক্ষতিপূরণ পেলেও, এখনও কেউ শাস্তি না পাওয়ায়, ক্ষুব্ধ আনন্দর পরিবার।
শুধু আনন্দ বর্মনই নন। জোড়পাটকি গ্রামে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু হয়েছিল মণিরুজ্জামান মিঞা, হামিউল হক, হামিদুল মিঞা ও নুর আলম মিঞাদের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন এই চারজন। পরিবারের দাবি, রাজ্যের তরফে সাহায্য মিললেও, কেন্দ্রের থেকে কানাকড়ি মেলেনি। দাবি আদায়ে, হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলাও করেছে পরিবার।
ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিধানসভা ভোটে মৃত হামিদুলের স্ত্রী আসিমা বিবি। তাঁর একটাই দাবি, 'আমি দোষীদের শাস্তি চাই।'
বিধানসভা ভোটে মৃত মণিরুজ্জামানের বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী এতবড় ক্ষতি করল কিন্তু কোনও ক্ষতিপূরণ দিল না, কেন্দ্র সাহায্য করেনি, রাজ্য যতটুকু দেওয়ার দিয়েছে, চাই দোষীদের শাস্তি হোক।'
গ্রামে শহিদ দিবস পালন
এই প্রেক্ষাপটে, রবিবার গ্রামে শহিদ দিবস পালন করবে শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটি। যে স্কুলে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সেই স্কুলের মাঠেই বাঁধা হয়েছে মঞ্চ। তৈরি হয়েছে শহিদ বেদি।
আরও পড়ুন: Kolkata: আলিপুরে বহুতল থেকে উদ্ধার পরিচারকের রক্তাক্ত দেহ, তদন্তে পুলিশ
শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সভাপতি আলিজার রহমান বলেন, 'এখনও কেন্দ্রীয় ক্ষতিপূরণ পাইনি। ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছি।'
শুধু গ্রামবাসীরাই নন। দিনটিকে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূলও। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি।
রাজনীতি আছে রাজনীতিতেই। আর এসবের মাঝে প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় দিন গুনছে মৃতদের পরিবার।