শুভেন্দু ভট্টাচার্য ও রাজা চট্টোপাধ্যায়, কোচবিহার: ফের সামনে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবি। এবার পথশ্রী প্রকল্প নিয়ে তরজা। বচসা গড়াল মারামারিতেও। তৃণমূলের ২ গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ঘিরে রণক্ষেত্র কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ। গোটা ঘটনায় জখম হয়েছেন ২ পক্ষের অন্তত ৪ জন।   তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ঘিরে রণক্ষেত্র কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতির গোষ্ঠীর লাঠালাঠির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে যায় মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ, আটক করা হয় দুপক্ষের বেশ কয়েকজন।


বাঁশ নিয়ে হামলা, মারপিট, পাথরবৃষ্টি- কী হল না? পথশ্রী রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজ নিয়ে বিবাদের জেরে কার্যত ধুন্ধুমার হল মেখলিগঞ্জে ভোটবাড়ির গোন্দাপাড়া। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোটবাড়ি পঞ্চায়েত সদস্য রেণু বেগমের সঙ্গে ভোটবাড়ির তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি আলতাফ আলির বিবাদ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি মুজিবর রহমানের জমিতে তাঁর অনুমতি ছাড়াই রাস্তা তৈরি শুরু হয় বলে অভিযোগ। কাজে বাধা দেন মুজিবর। খবর পেয়ে সদলবলে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আলতাফ আলি। প্রথমে বচসা। তা থেকে শুরু হয় ২ পক্ষের সংঘর্ষ। মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন ২ পক্ষের ৪ জন। তাঁরা জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তৃণমূল কর্মী মুজিবর রহমান বলেন, 'ওটা তো রেকর্ডের সম্পত্তি না। ভাই ওরা সম্পত্তি ছাড়বে না। যা জায়গা আছে রাস্তা হবে। একটু বোঝার ভুল আছে আমাদের।' গোন্দাপাড়ার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আলতাফ আলি বলেন, 'রাস্তার কাজ এক পাশে শুরু হয়ে গেছে। এক পাশে শেষ হয়ে গিয়েছে। ওরা করতে দেবে না। ওরা উন্নয়ন চায় না।' দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ভোটবাড়ির তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। ভোটবাড়ির তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি বলেন, 'ওরা সাত-আট ভাই। মুজিবর হামিদা। ওরা বাধা দিয়েছে। আমরা রাস্তা বাড়াতে দেব না। ওরা তৃণমূল করে। আমরাও তৃণমূল করি। কথা কাটাকাটি করতে করতে মারামারি হয়ে গেছে নিজেদের মধ্যে। হঠাৎ করে নিজেদের মধ্যে মারধর হয়ে গিয়েছে।' যদিও তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির উল্টো সুর মেখলিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক পরেশ অধিকারীর গলায়।  তিনি বলেন, 'ওখানে কোনও গোষ্ঠী নেই। ওখানে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী নেই ভোটাবাড়িতে। একটা রাস্তার কাজ সকাল বেলায় হচ্ছিল। তার জায়গা নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা মারপিটে পরিণত হয়। থানায় কেউ অভিযোগ জানায়নি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।'


বিজেপির কটাক্ষ:
ঘটনায় শাসকদলকে নিশানা করেছে বিজেপি। দলের জেলা কমিটির সদস্য দিব্যনাথ বর্মন বলেন, 'এটা পরিষ্কার এই ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে। এটা ভাগাভাগি নিয়ে দুই পক্ষের লড়াই। এটা নতুন কিছু নয়। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেকটা প্রকল্পে এত দুর্নীতি। একটা কাজও ঠিক হচ্ছে না। এটা নতুন কিছু নয়। যত পঞ্চায়েত ভোট আসবে তত এটা বাড়বে।'


আরও পড়ুন: চন্দন যাত্রার হাত ধরে মাহেশে রথযাত্রার সূচনা, সকাল থেকে উপচে পড়া ভিড় মন্দিরে