শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচবিহার (Coochbihar) জেলা তৃণমূলের (TMC) অন্দরে অস্বস্তি জারি। এবার দলের জেলা চেয়ারম্যানের নিশানায় জেলা সভাপতি। পার্থপ্রতিম রায় তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দিচ্ছেন না, অভিযোগ গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের। দলের জেলা সভাপতির কর্মসূচি বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান। তা নিয়ে নীরব জেলা সভাপতি। 



কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, "যে সভায় চেয়ারম্যান হিসেবে আমার নাম থাকবে না পার্থ প্রতিম রায়ের সেই সভা আমি বয়কট করব। আত্মসম্মান হারিয়ে ওর সাথে রাজনীতি করা সম্ভব নয়। কোচবিহার জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, "গিরীন্দ্রনাথ বর্মন দলের ভেতরেই কথাটা বলতে পারতেন।" 


কোচবিহারে অস্বস্তি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না তৃণমূলের। এবার জেলা তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যানের বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এল। রবিবার মাথাভাঙা দু‘নম্বর ব্লকের বড় শৌলমারিতে তৃণমূলের কর্মিসভা ছিল। প্রচারের ফ্লেক্সে প্রধান বক্তা হিসেবে তৃণমূল জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের নাম থাকলেও, জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের নাম তাতে ছিল না। 



তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রবিবারই সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করেন গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, যেখানে তিনি লিখেছেন কষ্ট হলেও আগামীকে মানতে হবে। কোচবিহার জেলার তৃণমূল চেয়ারম্যানের অভিযোগ, জেলা তৃণমূল সভাপতি তাঁকে প্রাপ্য মর্যাদা দিচ্ছেন না। 


আরও পড়ুন, দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি, হিট-স্ট্রোক থেকে বাঁচতে কী কী করণীয়?


গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, "মাথাভাঙা, নিশিগঞ্জ কর্মিসভায় কোথাও ফেস্টুনে নাম নেই। জেলা চেয়ারম্যান হিসেবে অপমানিত বোধ করেছি। আমি সভাপতি থাকাকালীন সেই সময়ের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহকে তাকে যোগ্য মর্যাদা দিয়েছি। কিন্তু পার্থপ্রতিম রায় তা দিচ্ছে না।" এখানেই শেষ নয়। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁকে গুরুত্ব না দেওয়া হলে, জেলা সভাপতির সমস্ত সভা বয়কটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। 


জেলা তৃণমূল সভাপতিকে ফোন করা হলে, তিনি এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবার কোচবিহার তৃণমূলের নতুন কোর কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যানের নিশানায় জেলা তৃণমূল সভাপতি। 


কোচবিহারে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে। কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, "তৃণমূলের অন্দরে হাস্যকর পরিস্থিতি। গিরীন্দ্রনাথ বর্মন শিক্ষক মানুষ, দলের চেয়ারম্যান, তাঁকে পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। কখন কাকে ওঠাচ্ছে, এ সার্কাসেই সম্ভব।" 


এর আগে কোচবিহারে দলের কোর কমিটিতে ঠাঁই না পেয়ে সোশাল মিডিয়ায় নিজেকে মুক্ত বিহঙ্গ দাবি করে পোস্ট করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।