ব্রতদীপ ভট্টাচার্য,পূর্ব মেদিনীপুর: দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তাঁর ছেলেকে। মনিটরে দেখানো মৃতদেহের মধ্য়ে, ছেলের মুখটাও তিনি দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি। কিন্তু ফেরত পাচ্ছেন না ছেলের মৃতদেহ। কারণ, সেটি বিহারের এক পরিবার নিয়ে চলে গেছে। চরম সমস্য়ায় পড়েছেন সন্তান হারা বাবা। এদিকে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার মুখ থেকে নিজে বেঁচে ফিরলেও, ভাইয়ের খোঁজ পাচ্ছেন না ভগবানপুরের বাসিন্দা এক ব্য়ক্তি। 


স্ক্রিনে ভেসে উঠছে একের পর এক ছবি। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় মৃতদের মুখ। বেশিরভাগ মুখই বীভৎস, বিকৃত হয়ে গেছে। তারমধ্য়ে থেকেই চেনা মুখ খুঁজে বের করার চেষ্টা। ওই দিকে তাকিয়ে দেখছে পরিবারের লোকজন। একটা মুখ দেখে চমকে উঠেছিলেন বাবা। এটাই তো তার বহুদিনের চেনা। যে মুখ দেখে হাসি ফুটে উঠত। যে মুখের দিকে তাকিয়ে এককালে বলে যেতেন একের পর এক রূপকথার গল্প। আজ লাশকাটা ঘরে, মৃতদের ভিড়ের মধ্য়ে এভাবেই ছেলেকে চিনতে পারেন বাবা। কিন্তু, চিনতে পারলেও, ফেরাতে পারছেন না ছেলেকে। 


কোলাঘাটের বাসিন্দা, শেখ জহর আলি। মার্বেলের কাজ করতেন। যাচ্ছিলেন ভুবনেশ্বর। শুক্রবার উঠেছিলেন অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। এরপরই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। কোনও খোঁজ খবর পাচ্ছিলেন না ছেলের। ছুটে আসেন ওড়িশা। একের পর এক হাসপাতালে ছুটে বেড়ান। কিন্তু কোথাও হদিশ পাননি। শেষমেষ, ভুবনেশ্বর AIIMS-এ মনিটরে মৃত ছেলের ছবি দেখতে পান বলে দাবি। কিন্তু পেলে কী হবে। তাঁর ছেলের মৃতদেহ বিহারের এক পরিবার নিয়ে চলে গেছে বলে দাবি। চরম সঙ্কটে পড়েছে পরিবার। পরিবার ভুবনেশনব, বালেশ্বর, কটকের বিভিন্ন হাসপাতালে ছবি দেখে জানতে পারে, ভুবনেশ্বর এইমসে দেহ। বলা হয়, দেহ নিয়ে চলে গেছে। বিহারের একটি পরিবার নিয়ে চলে গেছে। এদিকে, মৃতদেহ না পেলে, মিলবে না আর্থিক সাহায্য়।


আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?


আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?


প্রসঙ্গত, বালেশ্বরে রেল বিপর্যয়, মামলা রুজু করল সিবিআই। বিপর্যয়ের দিন সকালে কারা ডিউটিতে ছিলেন, কারা ছিলেন বিকেলে?  সূত্রের খবর, ঘটনার দিন উপস্থিত রেলকর্মীদের তালিকা তৈরি করল সিবিআই।কারা ওইদিন ছুটিতে ছিলেন, সে নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করেছে সিবিআই। দুর্ঘটনার আগে সিগন্যাল রুমে কী হচ্ছিল, কারা ছিলেন প্যানেল কন্ট্রোল রুমে? কে প্যানেল কন্ট্রোল রুমে পয়েন্ট চেঞ্জ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন? প্রশ্ন সিবিআইয়ের। সিগন্যাল সবুজ থাকা সত্ত্বেও লুপ লাইনে কেন ট্রেন? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সিবিআই। ষড়যন্ত্র, না নাশকতা, দুর্ঘটনার পিছনে কারণ জানতে তদন্তে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ১০ সদস্যের সিবিআই টিম এর আগেই পৌঁছয় বালেশ্বরে। টিমের নেতৃত্বে আছেন সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর বিপ্লব চৌধুরী।