ময়ুখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ফের আইপিএস অফিসার (IPS Officer Damayanti Sen Transferred) দময়ন্তী সেনের বদলি। কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) স্পেশাল কমিশনার ২ থেকে বদলি, সরানো হল রাজ্য পুলিশের (West Bengal Police) এডিজি ট্রেনিং পদে। রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, এটি রুটিন বদলি। পঞ্চায়েত ভোটের সময় কাকদ্বীপে যে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছিল, তাতে গত ১৬ জানুয়ারি দময়ন্তী সেনের নেতৃত্বেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। গত ১১ মে, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা মৃত্যুর তদন্তেও তাঁকে নিয়েই 'সিট' গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তা ছাড়া, মাটিয়া, ইংরেজবাজার, দেগঙ্গা, বাঁশদ্রোণী ধর্ষণ-মামলার তদন্তের নজরদারির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল এই অভিজ্ঞ অফিসারকে।
কেন বদলি?
নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, এটি রুটিন বদলি। আইপিএস অফিসারদের এরকম বদলি হয়েই থাকে। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের যে পদে দময়ন্তী ছিলেন, তার থেকে আপাত ভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁকে সরানো হয়েছে বলে গুঞ্জন পুলিশ-প্রশাসনের অন্দরেই। প্রসঙ্গত, অতীতে একাধিক মামলার তদন্তভার দময়ন্তী সেনকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু কালিয়াগঞ্জের মামলার ভার যখন তাঁকে দেওয়া হয়, তখন সরকার-পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন যে এই মামলার ভার তিনি নিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সরকারের কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই। এর পর হাইকোর্টের তরফে এই অভিজ্ঞ পুলিশ অফিসারকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সেই নিয়ে কোনও উত্তর এখনও পর্যন্ত দেননি দময়ন্তী। তার মধ্যেই এই বদলির নির্দেশ।
রসিকা জৈন হত্যামামলা...
গত বছর জুলাইয়ে, আলিপুরে রসিকা জৈনের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় প্রায় দেড়বছর পর তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছিল সিট। এই সিটের নেতৃত্বে ছিলেন দময়ন্তী সেন। বস্তুত, হাইকোর্টের নির্দেশেই দময়ন্তীর নেতৃত্বে সিট গঠন করা হয়। তার পর, গত বছর, গ্রেফতার হন রসিকার স্বামী। হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও খারিজ হয় রসিকার স্বামী কুশল আগরওয়ালের আগাম জামিনের আবেদন। ঠিক তার পরই আলিপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের সিট। প্রথম বিবাহবার্ষিকীর কয়েকদিন পর, ২০২১-এর ১৬ ফেব্রুয়ারি, আলিপুরে শ্বশুরবাড়িতে রসিকা জৈনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি, ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের সময় জোড়া খুনের তদন্তে সিট (SIT)। প্রসঙ্গত, ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের সময় কাকদ্বীপে দম্পতিকে পুড়িয়ে 'খুন'-র ঘটনাতেও দময়ন্তীর নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাঁর নেতৃত্বে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। ২০১৮-র ১৪ মে কাকদ্বীপের বুধাখালিতে বাড়িতেই উদ্ধার হয় দেবু দাস, ঊষারানি দাসের দগ্ধ দেহ। সিটের তদন্ত-রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ হাইকোর্টের। নিম্ন আদালতের সমস্ত বিচারপ্রক্রিয়ার উপরেও হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ। তৃণমূলে যোগ দিতে না চাওয়ায় দম্পতিকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ করে সিপিএম। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেই দম্পতির মৃত্যু, পাল্টা দাবি করে তৃণমূল।
আরও পড়ুন:মিটিংয়ে ধমক, হেনস্থা, অভব্য আচরণ! ভিডিও ভাইরাল হতেই সাসপেন্ড