আরামবাগ : 'রাখে হরি মারে কে', বোধহয় একেই বলে। বেঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে লাইনচ্যুত কামরার যাত্রী ছিলেন হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা সন্দীপ হালদার। স্ত্রী, মেয়ে-সহ পরিবারের ৪ জন ভেলোরে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। দুর্ঘটনার ঠিক আগে সন্দীপ আর তাঁর মেয়ে ঐশ্বর্যা পাশের কামরায় গিয়েছিলেন গল্প করতে। ফলে, ভয়ঙ্কর দুলুনি টের পেলেও তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। কোনওমতে ট্রেন থেকে বেরিয়ে বালেশ্বরে চলে যান আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখান থেকে বাসে হাওড়ায় আসেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা শুনে এদিন হাওড়া স্টেশনে এসেছিলেন দুর্ঘটনাগ্রস্তদের তালিকায় নাম নথিভুক্ত করতে। 


সন্দীপ বলেন, "আমরা যে কামরায় ছিলাম, সেখান থেকে দুই-তিনটে কামরা আগে বন্ধু-বান্ধবরা ছিল। ওখানে ওদের সঙ্গে গল্প করতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর যখন দুর্ঘটনা ঘটল, তখন জোর একটা ঝাঁকুনি পেয়েছিলাম। এটুকুই। সেরকম বড় কিছু চোট পাইনি। ঈশ্বরের কৃপায় বেঁচে ফিরে এসেছি। বালেশ্বরে আমাদের আত্মীয় আছে। ওদের ফোন করলাম। ওরা এসে নিয়ে গেল। ওদের কাছেই ছিলাম। পরে আমরা বাসে করে ফিরে এসেছি। আজ আমরা কলকাতায় ফিরলাম।"


বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেছেন, " মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেব। আর হোমগার্ডের চাকরি দেব। যাঁরা আহত তাঁদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। তুলনায় বেশি আহতদের ১ লক্ষ টাকা দেব। তুলনায় কম আহতদের ২৫ হাজার টাকা দেব। যাঁরা ট্রমায় ভুগছেন তাঁদের প্রথমে এককালীন ১০ হাজার টাকা দেব। তারপর চার মাস পরিবার প্রতি ২ হাজার টাকা পাবে। পাশাপাশি চাল, ডাল, তেল দেওয়া হবে। অনেকের হাত- পা বাদ গিয়েছে এই দুর্ঘটনায়। সংশ্লিষ্টদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকছে। তাঁদের পরিবারের কাউকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।'' 


এই ঘোষণার ভিত্তিতেই আজ হাওড়া স্টেশনে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের তালিকায় নাম নথিভুক্ত করাতে এসেছিল হালদার পরিবার। এদিকে আজ ওড়িশায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'বাংলার (West Bengal) ১০৩ জনের দেহ শনাক্ত (Body Identification) করা গেছে, ৩১ জনের খোঁজ নেই।'  সঙ্গে জানান, ওড়িশায় এখনও বাংলার ৯৭ জন চিকিৎসাধীন। সঙ্গে বলেছেন, 'বাংলার ৪০ জন আধিকারিক এখানে রয়েছেন। ৪০০-র বেশি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। ডাক্তার-নার্সরাও আছেন।'


আরও পড়ুন ; সকালে-বিকালে কারা ছিলেন ডিউটিতে ? ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে তালিকা তৈরি CBI-এর