তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: এখনও খোঁজ মেলেনি সিআরপিএফ (CRPF) জওয়ান বাঁকুড়ার ইন্দাসের কুশমুড়ি গ্রামের নিখিল ধারার। কর্মস্থলে যাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ। ওই জওয়ান মোবাইলের লোকেশন মিলেছে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল। দুর্ঘটনাস্থল থেকে মিলেছে জওয়ানের মোবাইল, আই কার্ড ও লাগেজ। তাতে প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ওই সিআরপিএফ জওয়ান।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছত্তিশগড়ে কর্মরত ছিলেন নিখিল ধারা নামে ওই সিআরপিএফ জওয়ান। কর্মস্থল থেকে দুমাসের ট্রেনিং করতে রাজগিরি গিয়েছিলেন। সেই ট্রেনিং শেষ করে তিনি ফিরছিলেন নিজের কর্মস্থল ছত্তিশগড়ে। পরিবারের সঙ্গে শুক্রবার শেষ কথা হয় বলে স্থানীয় গ্রামবাসী সূত্রে জানা গিয়েছে। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। নিখিল ধারার মোবাইল ট্র্যাক করে লোকেশন মিলে বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থল। অনুমান করা হয় ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ওই জওয়ান। জানা গিয়েছে, পরিবারে রয়েছে বয়স্ক বাবা ও মা, স্ত্রী ও কন্যা সন্তান।
পরিবার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধব সকলেই চেষ্টা করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি নিখিলের। গতকাল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পরিবার ও আত্মীয় পরিজনেরা। ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল ও লাগেজ উদ্ধার করা হয়েছে। লাগেজের মধ্য থেকে পাওয়া গেছে নিখিল ধাড়ার আই কার্ড। এখনও খোঁজ না পাওয়াতে ইন্দাসের গ্রাম ও পরিবার বেশ উদ্বিগ্ন। পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন বালেশ্বরে সেখানে প্রশাসনিক সহযোগিতায় নিখোজ নিখিল ধারাকে খোঁজের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
অপরদিকে, কেন ঘটল এই দুর্ঘটনা ? দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কবচের সুবিধা কি ছিল না এই লাইনে ? গত শনিবার উদ্ধারকাজ শেষে বালেশ্বরের রেলওয়ে মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছিলেন, 'উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে, এখন আমরা পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করছি। দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ প্রতিরোধকাারী কবচের সুবিধে এই রুটে উপলব্ধ ছিল না '। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই কবচের সুবিধা হাওড়া - দিল্লি ও দিল্লি - মুম্বই লাইনে উপলব্ধ রয়েছে। সব লাইনে এই কবচের সুবিধে নেই।
আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
গত ২৩ শে মার্চ , রেলমন্ত্রক কবচ নামক দেশীয় স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা (ATP) ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করে। এই পদক্ষেপ বড় দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। দেশের ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথে ধাপে ধাপে ওই ব্যবস্থা চালু করা হবে। কবচ পরিষেবা থাকলে দুটি ট্রেনের মুখোমুখ সংঘর্ষ যেমন এড়ানো সম্ভব, তেমন পিছন থেকে ধাক্কা লাগলে, তাও সামলে দেওয়া সম্ভব। Signal Passing At Danger (SPAD) এড়াতে সাহায্য করতে পারে এই ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশার সময় দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করবে এই বন্দোবস্ত। ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ও আপৎকালীন ব্রেক কষতেও সাহায্য করে কবচ পরিষেবা। কিন্তু এই রুটে এই পরিষেবা চালুই হয়নি।