রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: ওড়িশা রেল দুর্ঘটনায় (Coromandel express Accident ) সিবিআই তদন্তের সুপারিশ দেওয়া হয়েছ। ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন রেলমন্ত্রী। পয়েন্ট সিগনাল বদল করে দুর্ঘটনা ঘটানো হতে পারে। মমতার রেল কবচ তত্ত্ব খারিজ রেলের। আর এই পরিস্থিতিতে সোমবার শহরে প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। মমতা রেলমন্ত্রী থাকার সময়কে আতস কাচের তলায় রেখে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন, আমরা জানি। তাঁর সময় প্রায় সাড়ে পাঁচশোর মত অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে।'
'মমতার সময় প্রায় সাড়ে ৫০০ মত অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে'
দিলীপ ঘোষ বলেন, 'অনেকরকম প্রশ্ন উঠছে, এত বড় ঘটনা হয়েছে কারণটা কী ? অনেক কিছু হতে পারে। পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন লোক বিভিন্নরকম কথা বলছে। স্বাভাবিকভাবে এই ধরনের ঘটনা আগামীদিনে না হোক, তাঁর জন্য সরকারের ব্যবস্থা হওয়া উচিত। সেই জন্য সিবিআই তদন্ত হলে সব কিছু তথ্য সামনে আসবে সবার ধারণা এরকমই থাকে। সরকারও চেয়েছে সেটা যদি সিবিআই তদন্ত হয়, সত্য সামনে আসবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন, আমরা জানি। তাঁর সময় প্রায় সাড়ে পাঁচশোর মত অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। সাড়ে আটশ ডিটেল্মেন্ট হয়েছে। ১৪০০ এর মতো লোক মারা গেছে। আজকে তিনি বড় বড় কথা বলছেন। তখন কেন লাগাননি কবজ। তখন কেন আধুনিকীকরণ করেননি। রেলের তাহলে এই সমস্যা হতো না।'
'রেলকে লুটেছেন ওনারা'
তিনি আরও বলেন, 'তখন রেলকে আটকে রেখেছিলেন,ভাড়া বাড়তে দেবেন না, সুবিধা দেবেন না। তাঁর মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন, তাকেই পাল্টে দিলেন উনি। রেল বাজেট পেশ করে আলোচনা করতেই পারলে না তার আবার বড় বড় কথা বলছেন। রেলকে লুটেছেন ওনারা। নিজের লোকদের চাকরি দিয়েছেন সব। সব থেকে বড় ঘোটালা রেলে হয়েছে। তখন থেকে দুর্নীতি করতে শিখেছেন রেল থেকে। আজকে রেলের দূর্দশা কেন? কেন মোদিজিকে এত কষ্ট করতে হচ্ছে ? সেই জন্য যারা কিছুই করেনি লুট করেছেন তাদের বড় বড় কথা বলা উচিত নয়। সরকার কাজ করছে । গত ৯ বছরের মধ্যে কটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে ? অ্যাক্সিডেন্ট কমেছে। সরকার সমস্ত সত্য খুঁজে বার করবে।
'ভাইপো জীবনে কী করেছেন ?'
অপরদিকে, 'যার গ্রেফতার হওয়ার কথা, পদত্যাগ করার কথা, সে বলছে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ। সবুজ পতাকা হাতে উদ্বোধন করে কৃতিত্ব নিলে মৃত্যুর দায়ও নিতে হবে', রেলমন্ত্রীকে আক্রমণ অভিষেকের। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরদিন পদত্যাগের নাটক করেছেন। কোনও দায়িত্ব নেননি। কোন কাজ পুরো করেননি। যখন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ওনার যোগ্যতা বোঝা গেছে। আর ভাইপো জীবনে কী করেছেন ? তিনি সমালোচনা করে দায়িত্ব শেষ করছেন। পদত্যাগ চাইছেন। পদত্যাগ নয়, পদে থেকে কাজ করে দেখানোটাই হচ্ছে পুরুষ। যেটা ওনাদের মধ্যে নেই।
'..জীবনের দাম নেই'
'রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিশন ডিভাইসের ব্যবস্থা। কেন ছিল না ? সিগনালিং সিস্টেম ভগবানের দয়ায় চলছে। সমন্বয় ছিল না', আক্রমণ মমতার। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'অ্যান্টি কলিউশন যদি উনি করে থাকেন, তারপরে যারা মন্ত্রী হয়েছেন , সেই সময় এত অ্যাক্সিডেন্ট কেন হয়েছে ? যারা মারা গেছে এদের জীবনের দাম নেই। যখন ঝাড়গ্রামে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের অ্যাক্সিডেন্ট হল, ওনারা বলেছিলেন যে মাওবাদী হাত আছে। এখন বলছেন পদত্যাগ চাই। তখন কেন পদত্যাগ চাননি রেলমন্ত্রীর। এসব ড্রামা আমরা জানি লোক ভুলে যাবে না এত সহজে। আপনারা রোজ রোজ নাটক করেন সব মনে আছে।'
আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
'সবকটাকে ভেতরে যেতে হবে'
ফিরহাদ বলছেন, 'কীসের জন্য কবচ ? রেলমন্ত্রীর গায়ে পরানোর জন্য ? মেক ইন ইন্ডিয়া এখন ডিজাস্টার ইন্ডিয়া। রেলমন্ত্রীর গায়ে পরাতে কবচ'। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'যিনি ডগে তুলে দিয়েছেন কর্পোরেশনের লোককে জল দিতে পারেন না। একটা তুফান এল, সাত দিন জল নেই বিদ্যুৎ নেই, তাঁর যোগ্যতা আমরা জানি। লোকের সমালোচনা করে উনারা ভাবছেন, এই সব উল্টোপাল্টা বলে দুর্নীতিটাকে চাপা দেবেন। বাঁচার কোনও রাস্তা নেই। সবকটাকে ভেতরে যেতে হবে।'