নয়া দিল্লি: বালেশ্বরের বাহানগা। ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৭৫জনের মৃত্যু। আহত হাজারেরও বেশি। কিন্তু কীভাবে ঘটল এতবড় দুর্ঘটনা? দায় কার? চলছে তরজা। এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে এদিন একহাত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি কালকে গেছি আপনারা শুনেছেন একটা খারাপ কথা বলিনি। আমি কোনও আক্রমণ করিনি। রেলমন্ত্রী আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি বললে আরও বলতে পারতাম। কারণ রেলটা আমি হাতের তালুর মতো জানি। সিগন্যালিং সিস্টেম কেউ দেখেই না। অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস ছিল না কেন। রেল বাজেটও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলভবনও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলকে বেচার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।'
মমতার কথায়, 'আমি ভেবেছিলাম এই সময়টা রাজনৈতিক কথা বলব না।হঠাৎ আমার কাছে একটা ম্যাসেজ এল। তাতে তাঁরা একটা লিস্ট দিয়েছে আমার সময় কত মারা গেছে রেল দুর্ঘটনায় আমি যে আধুনিক করে দিয়ে এসেছিলাম রেলকে তার জন্যই দুর্ঘটনা কমেছে। যে তথ্য ওরা দিয়েছে ওটা ভুল ইনফরমেশন। আমি তো এখন রেলমন্ত্রকে নেই।'
এরপর বিজেপিকে নিশানা করে পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বলেন, 'আমি যদি জিজ্ঞাসা করি গোধরায় কতজন মারা গিয়েছিল। আমি তো সব করে দিয়ে এসছিলাম বলে রেলটা স্বাভাবিক ছিল। যাদের দায়িত্ব ছিল নৈতিকতার তারা দায়িত্ব না নিয়ে আমার সময়ে কত মরেছে হিসেব করতে বসেছে। সেই সময় চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগানো হয়েছিল। কতজন মানুষ মারা গিয়েছিলেন? আপনাদের সময় অনেক দুর্ঘটনা হয়েছে। আমরা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি কারণ দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এত মানুষের মৃত্যুর পর তো ক্ষমা চাইতে পারতেন। এটা সম্পূর্ণ গাফিলতি। কোনও কো-অর্ডিনেশন ছিল না। না হলে ৮-১০ মিনিটে কলিশন হতে পারে না।'
আরও পড়ুন, 'রেল আমার কাছে সন্তানের মতো, রেলমন্ত্রীকে পরামর্শ দিতে রাজি', করমণ্ডল দুর্ঘটনায় মন্তব্য মমতার
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ এ বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারে রেলমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎকালীন হিসেব টেনে মমতা বলেন, 'আমার সময়ে আমি ১৫ টাকায় মান্থলি করেছিলাম। আমি এক টাকাও রেলের বাড়া বাড়াইনি। বিজেপি সরকার তো প্রতি বছরে ট্রেনের বাড়িয়ে চলেছে। সংসদ ভবন, নিজের নামে স্টেডিয়াম। নিজেদের স্মরণীয় রাখতে যে খরচ করেছেন তা রেলকে দেননি, পঞ্চায়েতকে দেননি। আমি বদলার কথা বলি না, বদলের কথা বলি।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকারে যোগ দিয়েছিলেন এবং ১৯৯৯ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।২০০০ সালে, তার প্রথম রেল বাজেটে, তিনি পশ্চিমবঙ্গে অনেকগুলি নতুন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করেছিলেন। ২০০৯ এও ইউপিএ-২ সরকারের রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি। ২০১৩-তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার সময় সেই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এদিন বাদ দিলেন সেই প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, '২০২০ সালের জন্য ভিশন তৈরি করে এসেছিলাম। এক্সপার্ট কমিটি তৈরি করে এসেছিলাম। যত স্টেশন নতুন হচ্ছে সব আমি করে এসেছিলাম। যত মেট্রো ট্রেন মুম্বই বিকাশ আমার সময় আমি করে এসেছিলাম।'