হাওড়া : মালগাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ। করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Derailed) ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যে দুর্ঘটনায় শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলেই আশঙ্কা করছেন প্রত্যক্ষদর্শী, ট্রেনযাত্রীরা।


প্রত্যক্ষদর্শী থেকে ট্রেনযাত্রীরা জানাচ্ছেন, দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পরে একের পর এক কামরা শুধু লাইনচ্যুতই হয়নি। কার্যত দেশলাই বাক্সের মতো উল্টে গিয়েছে। যেখান থেকে খালি ভেসে আসছে দুর্ঘটনার কবলে পড়া দুর্ভাগ্যদের আর্তনাদ। ট্রেনের একাধির বগি শুধু উল্টে যাওয়াই নয়, ঘুটঘুটে অন্ধকারের মাঝেও ট্রেন লাইন ও গোটা এলাকা জুড়ে মানুষকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে তাঁরা দেখেছেন বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও ট্রেনযাত্রীরা। ভয়-আতঙ্কের আবহ সামলে তাঁদের বক্তব্য, চারিদিকে শুধুই রক্ত। কারও মাথা ফেটে গিয়েছে তো তো কারও হাত কেটে পড়েছে। প্রত্যেকেরই আশঙ্কা শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে।


প্রবল সংঘর্ষে তিনটি বাদে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সবকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কার্যত ছিটকে গিয়ে কামরাগুলো পড়ে লাইনের বাইরে গিয়ে। মুখোমুখি সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই ছিল যে মালগাড়ির পাঁচটি বগিও লাইনচ্যুত হয়েছে। এতটাই জোরে দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ লাগে যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির ওপরে। ইতিমধ্যে খড়্গপুর থেকে বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী দল রওনা দিয়েছে দুর্ঘটনাস্থলের দিকে। স্থানীয়দের বক্তব্য, সন্ধে ৭ টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।


আরও পড়ুন- ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস


দুর্ঘটনার তীব্রতা ও ভয়াবহতা দেখে আশঙ্কা করা হচ্ছে, হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। শালিমার থেকে চেন্নাইয়ের পথে যাচ্ছিল ট্রেনটি। বালেশ্বরের কাছে বাহানাগর স্টেশনে কার্যত ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে এগোনোর মাঝে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনার পর কার্যত দেশলাইয়ের খোলের মতো লাইনের পাশে উল্টে পড়ে ট্রেনের কামরগুলি। দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর স্থানীয়রা প্রথমে ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। যারপর বিভিন্ন কামরা থেকে শুরু হয় মরিয়া উদ্ধারকার্য। ইতিমধ্যে ২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ঠিক কতজন আহত হয়েছেন, সে নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। শালিমার থেকে ট্রেনটি চেন্নাইয়ের পথ ধরায় রাজ্যের একাধিক বাসিন্দা ট্রেনটিতে সওয়ার ছিলেন বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।


কীভাবে দুটি ট্রেন এক লাইনে এসে পড়ল ? সিগনালিংয়ের কোনও সমস্যার জের নাকি কারোর গাফিলতির জেরে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা, খতিয়ে দেখার কাজও শুরু হয়েছে। যদিও আপাত যাত্রীদের উদ্ধারকাজেই নজর সকলের। উদ্ধারকাজে আপাতত মূল বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আলোর অভাব। যদিও স্থানীয় ও উদ্ধারকারী দল ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তাঁদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের যদিও আশঙ্কা, একাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায়।


আরও পড়ুন: আমের পরে ঠান্ডাপানীয় খেলে সত্যিই বিপদ? না কি শুধুই রটনা?