কলকাতা: এখন আমের মরসুম। গরমকাল বলে ঠান্ডাপানীয় খাওয়ার চলও বেশি। এই সময়েই একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ প্রায়শই আসছে ফোনে। ফরোয়ার্ডেড ওই মেসেজে উৎপত্তি কোথায় তা অবশ্য জানা নেই। কিন্তু মেসেজটি হঠাৎ পড়লে উদ্বেগে পড়তে বাধ্য।


ওই হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে আম খাওয়ার পরে কোল্ডড্রিংকস বা ঠান্ডা পানীয় খেতে বারণ করা হচ্ছে। ওই মেসেজে লেখা হয়েছে, কয়েকজন ব্যক্তি চন্ডীগড়ে যাচ্ছিলেন, আম খাওয়ার পরেই তাঁরা ঠান্ডা পানীয় খেয়েছিলেন। তারপরেই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন, সংজ্ঞাহীনও হয়ে যান। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর তাঁদের মৃত বলে জানান চিকিৎসকরা। সেই কারণেই আম খাওয়ার পরে ঠান্ডাপানীয় খাওয়া প্রাণঘাতী বলে দাবি করে ওই হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে লেখা হয়েছে। সবার কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আবেদন করে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠাতে বলে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাল হয়েছে এই মেসেজ। সেই মেসেডে আরও বলা হয়েছে যে ডাক্তাররা আম খাওয়ার পর যে কোনও ধরনের ঠান্ডা পানীয় খেতে বারণ করছেন। আমে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিডের সঙ্গে ঠান্ডা পানীয়ে থাকা কার্বোনিক অ্যাসিড মিশে বিষ তৈরি হয় বলেও দাবি করা হয়েছে ওই মেসেজে।


হোয়াটসঅ্যাপ যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দ্রুত যোগাযোগ করার জন্য কাজে লাগে। কিন্তু এই মাধ্যমেরই আবার ভুল ব্যবহারও হয়। বিশেষ করে ভুল তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে দিতে ব্যবহার হয়ে থাকে এমন মাধ্যম। অনেকসময়েই নানা ধরণের বার্তা, স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক পোস্ট হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসে। সেগুলোর সবকটিই কি ঠিক? সবকটিই কি চোখ বুজে বিশ্বাস করা উচিত?


বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, ফল খাওয়ার পরে ফল খাওয়ার ঠিক পরপরই কোনওধরণের কার্বোনেটেড ঠান্ডা পানীয় খাওয়া উচিত নয়। কারণ এই ধরনের পানীয় হজমে সামান্য সমস্যা তৈরি করে। কিছু খেলে প্রাকৃতিকভাবে তা হজমের জন্য শারীরবৃত্তীয় কাজ শুরু হয়। কিন্তু তখনই aerated কিছু খেলে পাকস্থলীতে এয়ার পকেট তৈরি হতে পারে, যা আদতে সুষ্ঠু হজম প্রক্রিয়াতে বাধা দেবে।


অনেকটা আম খাওয়ার পরে ঠান্ডা পানীয় খেলে অনেকের সামান্য অস্বস্তি হতে পারে। কিন্তু তা প্রাণঘাতী বিষয় সাধারণত হয় না বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কোনও সুস্থ-স্বাভাবিক ব্যক্তির আম খাওয়ার পরে ঠান্ডা পানীয় খেয়ে মৃত্যু হয়েছে এমন ঘটনার কথা সাধারণত দেখা যায়নি বলেই বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা। 


সব ফল একসঙ্গে খাওয়া যায় না। ফলের সঙ্গে যে কোনও খাবারও খাওয়া যায় না। কারণ তা হজমে সমস্যা তৈরি করে। গ্যাস, পেট ফুলে যাওয়া, অম্বলের মতো সমস্যা হতে পারে। সেভাবেই আমের সঙ্গে ঠান্ডাপানীয় এড়ানোই উচিত। আমের সঙ্গে দুধও খাওয়া উচিত নয়। শুধু দুধ নয়, দুধ থেকে তৈরি যে কোনও খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।


আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি। এমনিতেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে আমের সঙ্গে অন্য কিছু মিশিয়ে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। 


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: Appetite: খাবার দেখলেই অনীহা? একেবারেই নেই খিদে? প্রতিদিন সহজ কিছু নিয়ম মেনে চললে সমাধান হবে সমস্যার