কলকাতা: করোনার তৃতীয় ঢেউ (COVID 3rd Wave) আছড়ে পড়ার জল্পনায় আর লাভ নেই। বাংলা-সহ (West Bengal COVID Situation) গোটা দেশ এই মুহূর্তে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে। মঙ্গলবার জানিয়ে দিল রাজ্যের চিকিৎসক মহল। এ দিন দুপুরে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শহরের তিন বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকার, যোগীরাজ, অভিজিৎ চৌধুরী এবং দীপ্তেন্দ্র সরকার। সেখানে তাঁরা জানিয়ে দেন, দেশ যে এই মুহূর্তে তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা মানতে কোনও দ্বিধা নেই।


বড়দিন এবং বর্ষবরণের পর থেকেই রাজ্যে হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড সংক্রমণ। টিকাকরণ সম্পূর্ণ (COVID-19 Vaccination) হওয়া সত্ত্বেও আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। আবার দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় বারের জন্য সংক্রমিত হওয়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। রাজ্য প্রশাসন, পুরসভা, পুলিশ, হাসপাতাল, করোনা থাবা বসিয়েছে সর্বত্রই। এট করোনার (Coronavirus) তৃতীয় ঢেউ বই অন্য কিছু নয় বলে সাফ জানিয়েছেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, “তৃতীয় ঢেউ এসে গিয়েছে, আসছে, কবে নাগাদ আসছে, এ সব প্রশ্ন উঠএ আসছে। তাই প্রথমেই পরিষ্কার করে বলে দিই, আমরা তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে রয়েছি। সজোরেই আঘাত হানছে এই তৃতীয় ঢেউ এবং তা মানতে কারও কোনও দ্বিধা নেই।”


তৃতীয় ঢেউয়ে করোনার নয়া রূপ ওমিক্রনকে (COVID Variant Omicron) ঘিরে দুশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকাতেই প্রথম থাবা বসায় ওমিক্রন। তার সঙ্গে বাংলার বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করে চিকিৎসকেরা জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম যখন হানা দেয় ওমিক্রন, সেই সময় দৈনিক সংক্রমণ ৩৫০ থেকে ৩৫ হাজার হতে সময় লেগেছিল মাত্র ১০ দিন। অর্থাৎ মাত্র ১০ দিনে প্রায় ১০০০ শতাংশ সংক্রমণ বৃদ্ধি।ব্রিটেনেও দৈনিক সংক্রমণ ২ লক্ষ থেকে সওয়া ২ লক্ষ হতে ১০-১২ দিনই সময় লেগেছিল। বাংলায় গত ২৭-২৮ ডিসেম্বর থেকে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ।


আরও পড়ুন: Kunal Sarkar: মানুষ আবার হাসপাতালে ছুটে বেড়াক তা আমরা চাইছি না : কুণাল সরকার


আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে একটা বড় অংশের মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। তবে বাংলার জনসংখ্যাই ১০ কোটি, যা ব্রিটেনের চেয়ে বেশি। তাই এত মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। তাঁরা জানিয়েছএন, সবার আগে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রবীণদের টিকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই টিকা শরীরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছিল, তা শেষ হতে বসেছে। তার জন্যই রাজ্যের হাসপাতালে দৈনিক প্রায় ৫০ জন করে চিকিৎসকের আক্রান্তর হওয়ার খবর উঠে আসছে। আগামী দিনে বয়স্কদের মধ্যেও সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে। আবার রোগের আঘাতে শরীরে সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাস্কের ব্যবহারকেই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বলে মানছেন চিকিৎসকরা।