কলকাতা: গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিটে শতাব্দী রায়কে সাক্ষী করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
সূত্রের খবর, চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে তৃণমূল সাংসদের নাম রয়েছে ৪৬ নম্বরে।
কবে বয়ান রেকর্ড:
গত ২৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূল সাংসদের বয়ান রেকর্ড করা হয়। শতাব্দীর কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে, দাবি সিবিআই-এর। সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ৯৫ জন সাক্ষীর নাম রয়েছে চার্জশিটে।
বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের চার্জশিটে তাঁর দলেরই সাংসদ শতাব্দী রায়ের নাম সাক্ষী তালিকায় থাকায় শুরু হয়েছে জল্পনা।
সিবিআই সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের দুটি মোবাইল ফোন ছিল। সিবিআইয়ের দাবি, সেই দুটি মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়েছে। সেখানে সাংসদ শতাব্দী রায়ের নম্বর মেলে। তারপরেই শতাব্দী রায়কে ডেকে পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, শতাব্দী রায় জানিয়েছেন যে, অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলার জন্য সায়গল হোসেনকে ফোন করেছিলেন তিনি। সিবিআই বারবার দাবি করেছে যে গরুপাচারকারীদের সঙ্গে সায়গল হোসেনের মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই কথা বলতেন অনুব্রত। ফলে একজন সাংসদকেও যে অনুব্রতের সঙ্গে কথা বলতে সায়গল হোসেনকে ফোন করতে হয়েছিল, সেটাই হয়তো আদালতে দেখাতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
তৃণমূলের দাবি:
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, 'শতাব্দী রায় কারও নামে নির্দিষ্ট অভিযোগ করেননি। অনুব্রতর কোনও সচিবের কাছে সাংসদ ফোন করতেই পারেন।'
বিজেপির কটাক্ষ:
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'বীরভূম জেলায় যত দুর্নীতি হয়েছে, রাজনৈতিক হিংসা হয়েছে। তার তদন্ত হওয়া উচিত। উনি ওখানকার সাংসদ, ওখানে অনেকদিন কাজ করেছেন। তাঁর কাছে অনেক তথ্য থাকতে পারে।'
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা:
সুপ্রিম কোর্টে পিছোল অনুব্রত-মামলার শুনানি। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ অক্টোবর। ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। সেই মামলারই শুনানি পিছোল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। CBI সূত্রে দাবি, সাক্ষীদের বয়ানে বারবার অনুব্রত মণ্ডলের নাম উঠে আসছে। এর আগে, এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট বলে, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না CBI। এই রক্ষাকবচের বিরোধিতা করে, অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন CBI’এর গোয়েন্দারা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ইতিমধ্যেই গরু পাচার মামলায় CBI’এর হেফাজতে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলাতেও তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এই মামলার শুনানিতে এদিন, সুপ্রিম কোর্টে CBI’এর তরফে কিছুটা সময় চাওয়া হয়। ১৮ অক্টোবর, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
আরও পড়ুন: হেফাজতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ সিবিআই, পিছোল অনুব্রত-মামলার শুনানি