কলকাতা : 'তৃণমূলের প্রশ্রয়েই তো রাজ্যে উত্থান হয়েছিল বিজেপির। এখন সেই জায়গাটা ধরে রাখতে না পেরেই এসব বলছেন।' সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য প্রসঙ্গে এভাবেই তাঁকে পাল্টা খোঁচা দিলেন সুজন চক্রবর্তী। ‘তৃণমূলের নতুন ডাক, কাস্তে হাতুড়ি বেঁচে থাক’, 'ফিস ফ্রাই' জোট ও 'ছাপ্পা যোগ' সহ একাধিক মন্তব্য এদিন করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। যার পাল্টা পুরোটাকেই 'হাস্যকর দাবি' বলেছেন সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
পুরভোটে (Municipal Election 2022) বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে পর্যালোচনার জন্য শনিবার চিন্তন বৈঠক আয়োজিত করেছিল গেরুয়া শিবির। বৈঠকে বিজেপি (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, 'আমাদের বিরোধীরা একসময় বলতেন আমাদের সঙ্গে নাকি তৃণমূলের গট-আপ আছে। সিপিএমের বন্ধুরা বলতেন তৃণমূলের সঙ্গে আমরা নাকি সমঝোতা করেছি। আর আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি ছাপ্পা ভোট মারতে গেলে আটটা তৃণমূলকে দিলে দুটো সিপিএমকে ছাপ্পা দেওয়া হচ্ছে। এখন ফিস-ফ্রাই জোট তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের অন্দরে এখন নতুন স্লোগান তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের নতুন ডাক, কাস্তে-হাতুড়ি বেঁচে থাক।'
সিপিএমের মতোই সুকান্ত মজুমদারকে নিশানা করে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, 'পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে, তাই এমন সব হাস্যকর দাবি করছেন। মানুষের আশীর্বাদে ১০৮ পুরসভার মধ্যে ১০২টিতে তৃণমূল জিতেছে। সিপিএম একটি পুরসভাতে জিতলেও বিজেপি শূন্য ঝুলি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেই এই গাত্রদাহ।' তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও (Kunal Ghosh)। তিনি বলেছেন, 'সবে তো মার্চ মাস পড়ল, ঠিকমতো গরমই পড়েনি, তার আগেই সুকান্ত মজুমদারের মাথার গন্ডগোল শুরু হল। ওঁর সাবধানতা নেওয়া প্রয়োজন। একেবারে অরাজনৈতিক কথাবার্তা, বাংলার রাজনীতিতে বিজেপি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে, আর অন্ধু তৃণমূল বিরোধীতা করতে গিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম বিভিন্ন জায়গায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমঝোতা রেখে চলছে।'
প্রসঙ্গত, কলকাতা-সহ ৫ কর্পোরেশন নির্বাচনের পরে রাজ্যের ১০৮-টি পুরসভার ভোটেও বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। ১০৮টি পুরসভায় প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে, তৃণমূলের পরই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বামেরা। তারা পেয়েছে ১৪ শতাংশ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপির ঝুলিতে ১৩ শতাংশ ভোট। বামেরা তাহেরপুর পুরসভা দখল করতে পারলেও, বিজেপির ভাঁড়ার শূন্য।
আরও পড়ুন-'শুধু সন্ত্রাস বললেই হবে না, স্বীকার করতে হবে নিজেদের দুর্বলতা' বিস্ফোরক লকেট চট্টোপাধ্যায়