কলকাতা: নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে কীভাবে প্রস্তুতি? এবার তৃণমূল এবং বিজেপির পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। দলের অন্দরে কোন কোন ক্ষেত্রে এখনও দুর্বলতা রয়েছে তা উঠে এল দীর্ঘ রিপোর্টে।


বাংলা থেকে লোকসভায় শূন্য। রাজ্য বিধানসভায় শূন্য। জেলা পরিষদে শূন্য। পুরসভা বলতে টিমটিম করে জ্বলছে একমাত্র নদিয়ার তাহেরপুর। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতির অবস্থাও তথৈবচ। এই আবহে অনুষ্ঠিত হল সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের খামতি কোথায় তাও উঠে এল এই সম্মেলনে। একটি পেশাদার সংস্থার তৈরি করা দীর্ঘ রিপোর্ট পেশ করে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশান এর মাধ্যমে দেখিয়ে দিল সিপিএমের দুর্বলতা কোথায়। শুধু তাই না এই দুর্বলতা থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসতে হবে তারও বেশ কিছু পর্যালোচনা নিয়েও আলোচনা হল সিপিএমে রাজ্য সম্মেলনে। তবে এই পেশাদারী সংস্থা অর্থের বিনিময় কিছু করছে না এমনটাই দাবি করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদক। 


২৭-তম রাজ্য সম্মেলন থেকে ২০২৬ বিধানসভার ভোটে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে সিপিএম। তবে সে লড়াইয়ে নামার আগে দলের সামনেই এখন একগুচ্ছ সমস্যা। পার্টির অন্দরের খবর, সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্টিতে সবাই নেতা হতে চাইছেন। জোনাল কমিটি, জেলা কমিটির নেতা হওয়ার জন্য একপ্রকার লড়াই চলছে। কিন্তু শাখাস্তরে কাজ করার মানসিকতা নেই। ক্ষমতায় থাকাকালীন যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সিপিএমের সবচেয়ে বেশি আসন ছিল, সেখানেই এখন সাংগঠনিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। ভোট ৫ শতাংশেরও কম। দলের অন্দরের ব্যাখ্যা, ছাত্র ও যুব সংগঠনে মানুষ এলেও, তাদের ধরে রাখা যাচ্ছে না। আবার একটা বড় অংশের সমর্থনকে ভোটবাক্স পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারছে না দল। এর থেকে বেরিয়ে আসতে আন্দোলন-সংগ্রামই যে একমাত্র পথ, সম্মেলনের প্রথম দিনই তা পরিষ্কার করে দিয়েছে রাজ্য় সিপিএম নেতৃত্ব।


সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে কঠিন সমালোচনার মুখে পড়েছে নেতাদের ভূমিকাও। সূত্রের খবর, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বলা হয়েছে দলের বেহাল অবস্থার দায় নিতে হবে নেতাদেরও। শুধু মিটিং, বকতৃতা করলেই চলবে না। কেন নীচুতলার সংগঠন ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে তার জবাবদিহি করতে হবে নেতাদেরকেও। সূত্রের খবর, বারবার জোটসঙ্গী বদল, ছাত্র-যুব কর্মীদের ধরে রাখতে না পারা, ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থতার প্রসঙ্গও উঠে আসে আলোচনায়। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ জেলার প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, ওখানকার সমস্যা নিয়ে রাজ্য নেতারা সঠিক দৃষ্টি না দেওয়ার জন্যই তৃণমূল-বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। সূত্রের খবর, নেতৃত্ব বাছাইয়ের পদ্ধতি-সহ দুই ২৪ পরগনার গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে সরব হন সেই জেলার প্রতিনিধিরা।


আরও পড়ুন: Panagarh Woman Death: 'দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য়ে'র বলি এক তরুণী, ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উড়িয়ে রেষারেষির তত্ত্ব পুলিশের