কলকাতা: দীর্ঘ পাঁচ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে মাত্র ১৬ জনকে। গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতির (Group D recruitment) তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI) বিশেষ তদন্তকারী দলের (SIT) এমন আচরণে ক্ষুব্ধ আদালতও (Calcutta High Court)। তাই রদবদল ঘটিয়ে বুধবার নতুন করে সিট গড়ে দিয়েছেন তিনি। তদন্ত যে ঢিলেমি হচ্ছে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন স্পষ্ট করে। তা নিয়ে এ বার রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল (TMC) এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি-কে (BJP) এক আসনে বসালেন সিপিএ (CPM) নেতা শমীক লাহিড়ি (Samik Lahiri)।
তদন্তে ঢিলেমির নেপথ্যে তৃণমূল-বিজেপি বোঝাপড়া! দাবি শমীকের
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে সিবিআই। পাঁচ মাসের বেশি সময় আগে সিট গঠিত হলেও, মাত্র ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কেন, বার বার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের কথা বললেও, কোনও তথ্য-প্রমাণ নেই কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোাধ্যায়। এর পর আদালতের তৈরি সিট ভেঙে দিয়ে, নতুন করে সিট গঠন করেন তিনি। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই এবিপি আনন্দে মুখ খুললেন সিপিএম নেতা শমীক।
এ দিন ফোনে এবিপি আনন্দ-কে তিনি বলেন, "তৃণমূলের বিরুদ্ধে মোদি সরকার কোনও তদন্ত করতে রাজি নয়। সিবিআই-ইডি যেটুকু তদন্ত করছে, তা আদালতের নির্দেশে হচ্ছে। অনিচ্ছুক ঘোড়াকে পুকুর অবধি টেনে নিয়ে গেলেও, জল খাওয়ানো যায় না। তাদের লক্ষ্য যদি হয় পিসি-ভাইপোকে রক্ষা করার, তদন্ত এগোবে কী করে! আদালত ভর্ৎসনা করে ঠিকই করেছে। আমাদের বক্তব্য, কেবল হাত-পা-কান ধরে নয়, মাথা গুলিকে ধরুন। সঠিক তদন্ত করুন। শাস্তি দিন দোষীদের। যোগ্য প্রার্থীদের বিচার দিন।"
এর আগে, সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গেলেও, এ দিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তদন্তে আস্থা রাখার কথা বলতেই শোনা যায় বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। সিবিাই না থাকলে, দুর্নীতি বেরতোই না, তদন্ত হত না বলে মন্তব্য করেন তিনি। তারও জবাব দিয়েছেন শমীক। তাঁর কথায়, "সিবিআই কি তদন্ত নিজে থেকে করেছে! আদালতে গিয়ে মামলা করে নির্দেশ আদায় করে আনতে হয়েছে। অন্য রাজ্যে নিজে থেকেই তদন্ত করে, তা অবশ্য রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে। এখানে আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরও তদন্ত করছে না। ঢিলেঢালা ভাব কেন? আসলে বিজেপি-তৃণমূলের বোঝাপড়া রয়েছে। না হলে, যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, এই সরকার জেলের বাইরে থাকে নাকি!"
আদালতে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই
বুধবার গ্রুপ C, গ্রুপ D নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রেক্ষিতে সিবিআই-এর কড়া সমালোচনা করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রায় ছয় মাস কেটে গেলেও, সিবিআই কিছুই করেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে সিবিআই-এর সিট-ও পুনর্গঠন করেন তিনি। আগের দুই জনকে বাদ দিয়ে আরও চার জনের নাম সংযুক্ত করেন। অন্য রাজ্যে থাকা ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিককেও নেতৃত্বদানে ফেরানোর নির্দেশ দেন।