ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: ৫১ সতী পীঠের অন্যতম পীঠ হল বীরভূমে (Birbhum) লাভপুরের (Labhpur) মা ফুল্লরা। প্রতি বছরের মত এ বছরও মাঘ পূর্ণিমার এই বিশেষ দিনটিতে হয় মায়ের বিশেষ পূজা অর্চনা।
প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত আছে নন্দগিরি মহারাজ কেদারনাথ থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়ে লাভপুরে এসেছিলেন। তখন এই এলাকা গভীর জঙ্গলে ঢাকা। সেখানেই জঙ্গলের ভিতরে খুঁজে পেয়েছিলেন শিলাখণ্ড। তারপর সেখানেই তৈরি হয় মন্দির। কথিত রয়েছে, দেবী সতীর এখানে ঊর্ধ্ব ওষ্ঠ পড়েছিল, প্রাচীনকালে এই স্থানের নাম ছিল অট্টহাস। কথিত রয়েছে মাঘী পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে প্রাচীনকালে কৃষ্ণনন্দ গিরি মহারাজ মায়ের বিশেষ কৃপা লাভ করেছিলেন। আর সেই প্রাচীনকাল থেকেই আজকের এই মাঘী পূর্ণিমার বিশেষ দিনটিতে হয়ে থাকে বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা। আর তাই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন আজকের দিনে মায়ের কাছে পুজো দিতে। প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে, আজকের দিনে দেবীর কাছে প্রার্থনা করলে তা পূর্ণ হয়। তাই অনেকেই আজ ভক্তিভরে দেবীর পুজো দেন। পুজো ঘিরে বসে মেলা। সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে বহু লোকজন আসেন।
কলকাতা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে লাভপুর। বীরভূম জেলার এই অংশ প্রাচীনকালে অট্টহাস নামে পরিচিত ছিল। এই নাম থেকেই মনে পড়ে, চণ্ডীর ব্যাখ্যায় রয়েছে, অসুর নিধনে দেবীর আবির্ভাব হওয়ার পর তিনি অট্টহাসিতে আকাশ বিদীর্ণ করছেন। অশুভের নিধনে শুভ শক্তির জয়োল্লাস।
সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল
পীঠ নির্নয় তন্ত্র মতে, এখানে সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল। পীঠ নির্মীত হওয়ার শর্ত অনুসারে এখানে কাদর বা কোপাই নদী উত্তর বাহিনী। স্থানীয়ভাবে এর নাম লা ঘাটা। বোলপুর থেকে লাভপুর যাওয়ার পথে ডানহাতে নতুন এই তোরণ নির্মীয় হয়েছে। সেখান থেকে কিলোমিটার খানেক ভিতরে ঢুকলে মূল মন্দির। মন্দির চত্বর খুব প্রশস্ত নয়। গর্ভগৃহের সামনে রয়েছে নাট মন্দির। জগমোহনে রয়েছে হাড়ি কাঠ। তবে এই মন্দির চত্বরের মধ্যে মূল তোড়ণের পাশের শিব মন্দিরটি সবচেয়ে পুরনো। নাটমন্দিরের পড়েই রয়েছে মায়ের ঘাট। সারাবছর এখানে দেবী দুর্গা রূপে পূজিত হয়ে থাকেন। কালী পুজো উপলক্ষে, দেবী দুর্গার পাশাপাশি মা কালী রূপে পুজো হয়ে থাকে মা ফুল্লরার।