অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: আবাস যোজনায় (Awas Yojna) ঘরের জন্য কাটমানি (cutmoney) দিতে চাননি, তাই মিলেছে প্রাণনাশের হুমকি! এমনটাই অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে।


কাটমানি না দেওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ!


প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্যে একের পর এক অভিযোগ সামনে এসেছে। কোথাও টাকার বিনিময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তো কোথাও আবার বেনিয়মের অজস্র অভিযোগ সামনে এসেছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল জেলার দুর্নীতির অভিযোগ সরজমিনে খতিয়ে দেখেও গেছেন।


এবার আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার পর ১০,০০০ হাজার টাকা কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠল। টাকা দিতে অস্বীকার করায় একটি পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য নারায়ণগড় ব্লকের কুনারপুর ৪ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগড় থানার ৪ নং কুনারপুর অঞ্চলের সাইবনী এলাকায়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।


ঘটনায় সাইবনী এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য, অঞ্চলের উপপ্রধান সুকলাল হাঁসদার বিরুদ্ধে নারায়ণগড় থানায় ও নারায়ণগড় ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সুভাষী প্রধান নামে অভিযোগকারী মহিলা। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তথা উপপ্রধান সুকলাল হাঁসদা।


জানা গিয়েছে, নারায়ণগড় থানার ৪ নং কুনারপুর অঞ্চলের সাইবনী এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ প্রধান নামে এক ব্যক্তি আবাস যোজনায় বাড়ি পায়। অভিযোগ বাড়ি তৈরি হওয়ার আগেই ওই পঞ্চায়েত সদস্য তথা কুনারপুর অঞ্চলের উপপ্রধান তাঁর কাছে থেকে প্রথমে ১০ হাজার টাকা কাটমানি নেয়। পরবর্তীতে গত সোমবার বাড়ির ছাদ ঢালাই করতে গেলে ফের দশ হাজার টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। টাকা দিতে অস্বীকার করায় পঞ্চায়েত ও এলাকার তৃণমূল কর্মীরা তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় এবং ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এমনকী টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয় বলে দাবি ওই বাসিন্দার।


এই ঘটনার পর নারায়ণগড় থানায় এবং নারায়ণগড় ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্বনাথ প্রধানের স্ত্রী সুভাষী প্রধান। 
অন্যদিকে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকলাল হাঁসদা। তিনি বলেন, 'ওদের বাড়ি তৈরির সময় যে মিস্ত্রি কাজ করেছিল তাকে টাকা দেয়নি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। ওরা চক্রান্ত করে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।' এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান রঞ্জিত সাউ বলেন, 'আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত এরকম কোনও অভিযোগ আসেনি। যদি কোনও অভিযোগ আসে সেটা আমরা খতিয়ে দেখব।' এদিকে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির।


আরও পড়ুন: North 24 Parganas: রাতের অন্ধকারে চাষের মাটি সাফ! কৃষক-মাটি মাফিয়া ধুন্ধুমার


পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারী বলেন, 'তৃণমূল মানেই চুরি, কাটমানি। শুধু এখানেই নয় যেখানে যাবেন প্রতিটি জায়গায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে প্রধান, উপ-প্রধান, ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা লুঠ করে যাচ্ছে। কেন্দ্রের প্রকল্প থেকে চুরি করেই এদের দিন যাপন করতে হয়।'