ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : কলকাতার আকাশে এখনও খটখটে রোদ। কিন্তু 'রেমাল' ( Remal ) আসতে আর বেশি দেরি নেই।  পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর হয়েছে নিম্নচাপ ( Depression )। শক্তি বাড়িয়ে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে বাংলার দিকে । গভীর নিম্নচাপ থেকে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয় সিস্টেমটি। তারপর তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তবেই তার নাম হবে রেমাল। আয়লা, আমফান, ফণী, ইয়াসের মতোই কি ভয়ানক হবে এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিঘাত ? তা তো বলবে সময়ই। তবে পূর্বাভাস বলছে, বেশ তীব্র আঘাত হানতে পারে এই ঝড়। 


আবহাওয়ার মানচিত্র বলছে, ক্যানিং থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই গভীর নিম্নচাপ। সাগর দ্বীপ থেকে এই মুহূর্তে নিম্নচাপের দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার। নিম্নচাপের জেরে দিঘায় বাড়ছে ঢেউ।  কলকাতার আকাশে মেঘের আনাগোনাও নেই বটে, তবে প্রকৃতি যে কোনও সময়ই রূপ বদলাতে পারে।  দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় আস্তে আস্তে মেঘলা করছে আকাশ। 


শনিবার সন্ধের মধ্যেই এই গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে। আর রবিবার সকালের মধ্যেই তা  শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে। তখনই তার নাম হবে রেমাল।  আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট অনুসারে, রবিবার মধ্যরাতে ভারতের সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে ঢুকবে 'রেমাল'। সেই সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার। 


শুক্রবার থেকেই দিঘায় উত্তাল সমুদ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস পাওয়ামাত্রই পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। ফিরিয়ে আনা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।  পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে হলদিয়া, কাঁথির এসডিও অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। 

জেলার মতো সতর্কতা কলকাতাতেও।  দুর্যোগ মোকাবিলায় আগেভাগে সতর্কতা নিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারই  'রেমাল' নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয় নবান্নে। বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশ আধিকারিকরা, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বিপর্যয় মোকাবিলা দল, বিদ্যুৎ দফতর, পূর্ত দফতর প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলে  বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে মাইকে সচেতনতা প্রচার।  বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলিকেও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।  


আবহাওয়া দফতরের  পূর্বাভাস অনুসারে, মালদায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়বে এই ঝড়।এমন পূর্বাভাসে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়ে গেছে মালদার আম চাষীদের।  এবছর এমনিতেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা এবং প্রচন্ড দাবদহের কারণে ফলন কম হয়েছে আমের।  তার উপরে গোদের ওপর বিষফোঁড়া এই ঘূর্ণিঝড়।  ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে আমের।  তাই আম পরিপক্ক হওয়ার আগেই আমপাড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে মালদার বাগান গুলিতে।   


রেমাল দাপটে ভাসবে মহানগরী, কলকাতায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।