সৌভিক মজুমদার, রুমা পাল ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টে ( Calcutta High Court ) ধোপে টিকল না হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের নির্দেশিকা। বকেয়া ডিএ-র ( DA ) দাবিতে বৃহস্পতিবার কোঅর্ডিনেশন কমিটির মিছিলে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি, সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ( Rajasekhar Mantha ) ।


রুটে বদল এনে, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে বৃহস্পতিবার কোঅর্ডিনেশন কমিটির মিছিলে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট
পাশাপাশি, সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বললেন, যে বিধিনিষেধের কথা আপনারা এখানে বলছেন, সেটা রাজ্যের শাসকদলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তো? রেড রোড বন্ধ করে যখন কর্মসূচি হয়, মিছিল হয়, তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না?


এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বললেন, ' একদিকে চাকরি নেই বলে , ডিএ নেই বলে প্রতিবাদ চলছে তাহলে সরকার খোকাবাবুর জন্য এত টাকা কেন খরচ করছে? কি যোগ্যতা তার? শুধু পিসির ভাইপো। ক্ষমতায় আসার আগে মমতা আন্দোলন করেননি রাইটার্স ঘেরাও করেননি? তাহলে এখন অন্যরা পারবে না কেন?'

আরও পড়ুন : 


প্রবল গ্রীষ্ম বাড়ায় অ্যাজ়মার প্রবণতা, তীব্র হয় কষ্ট, কীভাবে বাঁচবেন


মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা আরও বলেন, কিছু দল যখন মিছিল করে, তখন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি শাসক দলের কথা বলছি না। তখন তো পুলিশের কোনও অসুবিধা হয় না! মানুষ পরিবার নিয়ে রাস্তায় বেরোতে চায়, কিন্তু বেরোতে পারে না! তখন পুলিশের অসুবিধা হয় না? রাজ্য সরকারের তরফে পাল্টা সওয়ালে বলা হয়, যে রুটে মিছিল করার কথা বলা হচ্ছে, সেটি জনবহুল এলাকা। মিছিল করলে সাধারণ মানুষ, স্কুল, অফিস যাত্রী, ট্রাফিকের অসুবিধা হবে।
অ্য়াডভোকেট জেনারেল আরও জানান, অন্য রুটে অন্য জায়গায় এবং আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রুটে কর্মসূচি করতে দিতে রাজ্যের কোনও অসুবিধা নেই।


নির্দিষ্ট জায়গাতেই কর্মসূচি করতে দিতে হবে এই ধরনের দাবি কেউ জানাতে পারেন না। এটা কারও অধিকারের মধ্যে পড়ে না। সওয়ালে সরকারি আইনজীবী বলেন, দিল্লিতেও কৃষক আন্দোলনের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট একাধিক কড়া পর্যবেক্ষণ রেখেছিলেন। তখন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, শাহিনবাগের ক্ষেত্রে আন্দোলন দীর্ঘদিন চলেছিল, দিল্লি স্তব্ধ হয়ে গেছিল, তাই সুপ্রিম কোর্টকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। এখানে বিষয়টা সে রকম নয়।


রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ' ডেপুটেশন দিতে দেওয়া না হলে কর্মীরা ঠিক করবে কী হবে। প্রতিশ্রুতির কী হন। আন্দোলন তীব্রতর। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকেও বলেছি অংশ গ্রহণ করতে।' 


এদিন বিচারপতি মান্থা আরও বলেন, ৩০ থেকে ৪০টা মামলা আমার কাছে এসেছে মিছিল করার অনুমতি চেয়ে। 
কেন আদালতকে বারবার হস্তক্ষেপ করতে হবে? এরা আপনাদের অর্থাৎ রাজ্য সরকারি কর্মচারী। এরা কী চাইছে? মহার্ঘ ভাতা। বিরোধিতা করা বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন, কিন্তু শান্তিপূর্ণ মিছিল বন্ধ করতে পারেন না। স্কুল, কলেজ, বাজার, অফিস আছে বলে মিছিলের অনুমোদন প্রত্যাখ্যান করা যায় না। আন্দোলনকারীরা তো দেখাতে চান যে তারা কতটা অসুবিধের মধ্যে আছেন।
 


তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, 'পুলিশ কোনও ভাবনাচিন্তা করে হয়ত অনুমতি দেয়নি। ওরা আদালতে গেছে। আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে' 


মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা বলেন, এমন চারটে উদাহরণ দিতে পারি, যেখানে আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছে কিন্তু পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি। কিন্তু, কর্মসূচির ২ দিন আগে অন্য দল চেয়েছে আর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সেই অনুমতি দিয়েছে। 
এরপরই অত্য়ন্ত ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বিচারপতি মান্থা বলেন, বলতে পারেন কেন সরকারি আইনজীবীদের কার্যালয় থেকে অলিখিতভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল নির্দিষ্ট একটি এজলাসে অনুপস্থিত থাকতে?


আরও পড়ুন :


 কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের জীবনে অবশ্যই মেনে চলুন এই নিয়মগুলি