সমীরণ পাল, দমদম : প্রকাশ্য দিবালোকে হাড়হিম করা ঘটনা। জনবহুল মেট্রোস্টেশনে হল রক্তারক্তি। সর্বসমক্ষেই ঝরল রক্ত। একে বারে হাতে অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ। এ যেন সিনেমাকেও হার মানায়। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে রক্তারক্তি ঘটে গেল। দু'দল ছাত্রের মধ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারপিটে বইল রক্তগঙ্গা। বাকরুদ্ধ হয়ে গেল মানুষ। চোখের সামনে শেষ হয়ে গেল সতেরো বছরের নাবালক। 

কী ঘটেছে?                           

দুপুর তখন আড়াইটে। ভিড়ে ঠাসা দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন। সবার চোখের সামনেই এক স্কুল পড়ুয়াকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল সহপাঠীর বিরুদ্ধে। বাগবাজার হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মনোজিৎ যাদবকে ফেলে এলোপাথাড়ি কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় বরানগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সামান্য বচসা থেকেই খুন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। 

ঘটনাক্রম

জানা গিয়েছে, প্রত্যেকদিনের মতো স্কুল থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মেট্রোয় উঠেছিল মনোজিৎ। দুপুর আড়াইটে নাগাদ দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে নামার পরই বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, এরপরই এক ছাত্র ছুরি বের করে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে ওই পড়ুয়াকে। মেট্রো স্টেশনে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে মনোজিৎ। সহপাঠীরা অভিযুক্ত ছাত্রকে তাড়া করলে চম্পট দেয় সে।  এরপর বন্ধুরাই মনোজিৎকে মোটরবাইকে করে বরানগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা ওই ছাত্রকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় বাড়ির লোককে। খুনে অভিযুক্ত ছাত্র এখনও পলাতক!             

দিনে দুপুরে এমন ঘটনায় ছড়ায় আতঙ্ক। মেট্রোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণেশ্বর থেকে ব্রিজি স্টেশন অর্থাৎ ব্লু লাইনে সাধারণ কাজের দিনে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। সেখানেই খুনের মতো ভয়াবহ ঘটনায় মেট্রোর নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা। খুনে অভিযুক্ত ছাত্র এখনও পলাতক। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেন্সিক টিম।

প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, এক বন্ধুকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে অন্য বন্ধু। তারপর গলগল করে রক্ত বের হয়। আতঙ্কে সিঁটিয়ে যান মানুষ। এমন ঘটনা যে প্রকাশ্যে ঘটতে পারে , তা চিন্তাতীত।  ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা ? CCTV দেখেও কেন মেট্রো আধিকারিকরা ব্যবস্থা নিলেন না ? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।