সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি : পুরসভাকে দলীয় দফতরে পরিণত করা হয়েছে। এতদিন বাম-কংগ্রেস এই অভিযোগে রাস্তায় নেমেছে। এই অভিযোগের আবহেই সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিনয় তামাং ও রোহিত শর্মার সঙ্গে আজ পুরসভার মধ্যেই বৈঠক করলেন শিলিগুড়ির (Siliguri) প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব। তাহলে কি বাম-কংগ্রেসের অভিযোগই সঠিক ? এনিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।


বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিনয় তামাং জানিয়ে দেন, আগামী পুর নির্বাচনে শিলিগুড়ির নেপালি অধ্যুষিত এলাকায় প্রচারে নামবেন তিনি। গৌতম দেবও(Goutam Dev) জানিয়ে দেন, বিনয় তামাং এখন তৃণমূল নেতা। স্বাভাবিকভাবেই শিলিগুড়িতে দলীয় প্রচারে তিনি থাকবেন।


আরও পড়ুন ; তৃণমূলে যোগ দিলেন বিনয় তামাঙ্গ, রহিত শর্মা
 


আর এতেই কংগ্রেস অভিযোগ আরও তীব্র করেছে। জেলা সভাপতি শংকর মালাকার বলেন, গত সাত মাস ধরে নির্বাচনে পরাজিত ও জীবনে না দাঁড়ানো কিছু তৃণমূল নেতা পুরসভাকে পার্টি অফিসে পরিণত করেছে। মানুষ এর জবাব তো দেবেই। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, বিনয় তামাংকে দার্জিলিঙের গোর্খারা ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। শিলিগুড়িতে কোন গোর্খা ওঁর কথা শুনবে?


একই অভিযোগ সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যেরও। অবিলম্বে প্রশাসনিক বোর্ড ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।


প্রসঙ্গত, দিন দুয়েক আগেই তৃণমূলে যোগ দেন বিনয় তামাং। ঘাসফুলে যোগ দেন যোগ ১০ বছরের মোর্চা বিধায়ক রহিত শর্মাও (Rohit Sharma)। যা জিটিএ (GTA) নির্বাচনের আগে তৃণমূলের মাস্টারস্ট্রোক বলে মত বিশেষজ্ঞদের।


বিমল গুরুঙ্গের প্রত্যাবর্তনের পর পাহাড়ে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন বিনয় তামাঙ্গ। বিনয়ের যোগদানে পাহাড়ে তৃণমূল আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে ধারণা। ২০০৭ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জন্মলগ্নে একসঙ্গে ছিলেন বিমল গুরুঙ্গ ও বিনয় তামাঙ্গ। ১০ বছর একসঙ্গে পথ চলার পর এই দুই নেতার মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরে ২০১৭-তে। চার বছর আগে ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন বিমল গুরুঙ্গ। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পাহাড়। আর তখনই আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে যায় মোর্চা। তৈরি হয় গুরুঙ্গ শিবির ও তামাঙ্গ শিবির।


এবারের বিধানসভা ভোটে দুই শিবিরই আলাদা করে প্রার্থী দেয় পাহাড়ে। গুরুঙ্গ শিবিরের ঝুলি খালি থাকলেও, কালিম্পং আসনে জয়ী হন তামাঙ্গপন্থী প্রার্থী। এরপর জুলাইয়ে আচমকা দল ছাড়ার ঘোষণা করেন বিনয়। এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন খোদ বিনয় তামাঙ্গই। তিনি বলেন, ‘ভোটে হারের জন্য দল ছাড়লাম। ২০১৯ থেকে ষড়যন্ত্র চলছে আমাকে রাজনীতি থেকে হঠানোর জন্য।’