সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি: গোটা একটা দিন পেরিয়ে গেছে। এখনও মেরামতি শুরু হল না মাটিগাড়ার বালাসন সেতুর। বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। শুধুমাত্র হাঁটাচলা ও মোটরবাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে পড়ে মাটিগাড়া। সেখানে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর রয়েছে বালাসন সেতু। বুধবার সকালে নজরে আসে সেতুর তিন নম্বর পিলার বসে গিয়েছে। কলকাতা থেকে গন্তব্য শিলিগুড়ি হোক কিংবা পাহাড়, বালাসন সেতুর ওপর দিয়েই যেতে হয় সবাইকে। বাগডোগরা বিমানবন্দর যেতে গেলেও শিলিগুড়ি ও পাহাড়ের বাসিন্দাদের বালাসন সেতু পেরোতে হয়। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের দিক থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরগামী যানবাহন গাড়িধুরা থেকে পানিঘাটা হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কালিম্পং, সিকিম থেকে আসা গাড়ি নৌকাঘাট ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছচ্ছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পূর্ত দফতরের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক ৯-এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিশির দেব জানান, ‘আজ কলকাতার বিশেষজ্ঞ দল পরিদর্শন করেছে। আগামীকালের মধ্যে মতামত পেয়ে যাব। আজ নতুন করে আরও কোনও পিলার বসে যায়নি। যেহেতু যান চলাচল বন্ধ, তাই আর কিছু হয়নি। বিশেজ্ঞদের মতামত পেলেই কাজ শুরু করা হবে।’
মানুষের এই দুর্ভোগের জন্য বেআইনি বালি চুরির ঘটনাকে দায়ী করছেন পরিবেশকর্মীরা। জ্যোৎস্না আগরওয়ালের দাবি, ‘যেভাবে বালি তোলা, চর দখল করা হয়েছে, অবস্থার কিছু বদলায়নি, তার জন্য পিলার বসে গেছে। এরকম চলতে থাকলে আরও বিপর্যয় নেমে আসবে।’
এদিকে, এই ইস্যুকে সামনে রেখে শুরু হয়ে গেছে রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ি। মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মনের অভিযোগ, ‘রাজ্যের উদাসীনতার ফলেই এই ঘটনা ঘটছে। তাদের মদতে জমি মাফিয়াদের রাজ চলছে, তাই এই অবস্থা। এরকম চলতে থাকলে বড় বিপর্যয় ঘটবে।’
পাল্টা তৃণমূল নেতা ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য রঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘রাজ্য সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বালি-পাথর উত্তলন নিয়ন্ত্রণ করেছে। অনিয়ন্ত্রিত তোলার অভিযোগ উঠত, তা এখন নেই। যারা অভিযোগ করছেন, রাজনীতি করার জন্য অভিযোগ করছেন।’
কবে শুরু হবে মেরামতের কাজ? ফের কবে বালাসন সেতুতে যানচলাচল স্বাভাবিক হবে? সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন নিত্যযাত্রীরা।